লাইসেন্স টিম্বার কোম্পানির, আড়ালে কনটেইনার ডিপো

পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় চট্টগ্রাম নগরীর কালুরঘাট ভারী শিল্প এলাকার সাবের কনটেইনার ডিপোকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রবিবার (১৫ জানুয়ারি) জেলা প্রশাসকের ভ্রাম্যমাণ আদালতে এ জরিমানা করা হয়।

অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত। এ সময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযানের সময় সাবের টিম্বার কোম্পানির কনটেইনার ডিপোতে নানা অনিয়ম দেখেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স ও ফায়ার লাইসেন্সের নামের সঙ্গে ব্যবসার কোনও মিল নেই। টিম্বার কোম্পানি হিসেবে লাইসেন্স থাকলেও দেখা যায়, এটি কনটেইনার ডিপো। ফায়ার লাইসেন্সের মেয়াদ ২০২১ সালের ২১ জুন শেষ হলেও কর্তৃপক্ষ নবায়ন করেননি। গত বছরের ৭ জুন একসঙ্গে ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ দুই বছরের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে ডিপো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকা এবং সেফটি প্ল্যান না থাকায় ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ লাইসেন্সের নবায়ন স্থগিত রাখে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ডিপোর ভেতরে গিয়ে দেখা যায় একটি খালি কনটেইনারে অবৈধভাবে প্রায় ২০০ ড্রাম ডিজেল মজুত করা হয়েছে। ড্রামগুলোর বেশ কয়েকটির মুখ খোলা এবং পাশেই পড়ে রয়েছে প্রচুর সিগারেটের ছাই ও অংশ বিশেষ। ডিপোতে নেই পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা। এছাড়া গত ১৪ বছর ডিপো পরিচালনা করলেও ফায়ার সেফটি প্ল্যানের কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ডিপো কর্তৃপক্ষ।’

সাবের কনটেইনার ডিপোতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ২০ একরের এই ডিপোতে প্রায় ১৫০০ কনটেইনার থাকার কথা থাকলেও ছিল ৩৫টি। যার বেশির ভাগই অকেজো। ডিপোতে ১০০ জন বেতনভুক্ত কর্মচারী থাকলেও ফায়ারের প্রশিক্ষণ রয়েছে চার জনের। যদিও তাদের কেউই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করতে জানেন না। ডিপোতে ছিল না কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর থেকে পাস করা কোনও লে-আউট প্ল্যান। এসব অনিয়মের কারণে ডিপোর এজিএম মো. এনামুল হককে দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং এক মাসের মধ্যে যাবতীয় ত্রুটি সংশোধনের আদেশ দেওয়া হয়।’

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যাদের ফায়ার লাইসেন্স নেই বা লাইসেন্স থাকলেও ত্রুটির কারণে মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে; তাদের কোনও ছাড় নেই। বিএম কনটেইনার ডিপোর মতো ঘটনা আর যেন চট্টগ্রামে না ঘটে, সেজন্য জেলা প্রশাসনের এ অভিযান চলমান থাকবে।’