ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে উপনির্বাচন

সরাইল ও আশুগঞ্জে রুমিন ফারহানাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) নির্বাচনি এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে স্বাধীনভাবে সবাইকে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন দলটির স্থানীয় নেতারা।

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে আশুগঞ্জে দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করলে বিএনপিকে প্রতিহত করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকারও আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের নেতারা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছফিউল্লাহ মিয়ার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন ও আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের আহমেদ।

সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনি এলাকায় ভোট হওয়া পর্যন্ত রুমিন ফারহানাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বিএনপি উপনির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করলে কিংবা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের প্রতিহত করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।’

সভায় ছফিউল্লাহ মিয়া বলেন, ‌‌‘রুমিন ফারহানা তার কিছু নেতাকর্মীকে নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য বলেছেন। এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এখানে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয়, সেজন্য আমাদের যা যা করণীয় সব ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেহেতু নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে তারা, তাই প্রতিহত করবো আমরা। নির্বাচনে কে কাকে ভোট দেবে, তা দেখার বিষয় আমাদের নয়। তবে ভোট যাতে সুন্দর ও সুষ্ঠু হয়, সেজন্য আমরা অতন্দ্র প্রহরীর মতো কাজ করবো।’ 

এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি দুপুরে আশুগঞ্জের হোটেল রাজমণিতে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত সভায় নেতাকর্মীদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানান রুমিন ফারহানা। একইসঙ্গে উপনির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার পক্ষে কাজ করলে নেতাকর্মীদের দল থেকে বহিষ্কারের কথা জানান তিনি।

আশুগঞ্জে দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়

দলীয় নেতাকর্মীদের ওই সভায় রুমিন ফারহানা বলেন, ‌‘অনেকের সঙ্গে তার (আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া) ব্যক্তিগত কিংবা পারিবারিক সম্পর্ক থাকতে পারে। কিন্তু ভোটের দিন আমরা কেউ কেন্দ্রে যাবো না। কেউ যেন তার জন্য একটি ভোটও না চায়। দল অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে আছে। যে সাত্তারের জন্য কাজ করবে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এই আসনে উপনির্বাচন হবে। এই নির্বাচনে অংশ নিতে ১৩ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। ৮ জানুয়ারি যাচাই-বাছাইয়ের পর পাঁচ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। বৈধ ঘোষিত আট প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী দলীয় সিদ্ধান্তে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এরই মধ্যে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন জাতীয় পার্টির দুবারের সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা। তারা সরে দাঁড়ানোর ফলে জয়ের পথ সহজ হয়ে গেলো সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার। 

বর্তমানে সাত্তার ভূঁইয়ার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ ভাসানী, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল ও আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ।