কিশোরগঞ্জ থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩ তীর্থযাত্রীকে ছুরিকাঘাত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বাইপাস পৈরতলা রেলগেট এলাকায় একের পর এক ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে পৈরতলা রেলগেট এলাকায় বাসের তিন তীর্থযাত্রী ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন।

তারা হলেন- কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার দেবরাজ রায়ের ছেলে কলেজ শিক্ষার্থী স্নিগ্ধ রায়, একই এলাকায় স্বপন বর্মনের ছেলে প্লাবন বর্মন ও অপূর্ব। পরে তাদেরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যাত্রীবাহী বাসটি কিশোরগঞ্জ থেকে চট্টগ্রামে যাচ্ছিল।

ছুরিকাঘাতে আহত স্নিগ্ধ রায়ের বন্ধু আকাশ সরকার ও তন্ময় বায় জানান, মোট ৪৫ জন বাসযাত্রী কিশোরগঞ্জ সদর থেকে তারা চট্টগ্রামে তীর্থ ভ্রমণের জন্য প্রবর্তক মন্দির ও পুন্ডুরি ধামে যাচ্ছিলেন। পথে বাসটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরবাইপাস পৈরতলা এলাকায় রেলগেট এলাকায় পৌঁছালে ট্রেন যাওয়ার সময় লেভেল ক্রসিংয়ে আটকা পড়ে বাসটি। এ সময় তীর্থ যাত্রী প্লাবন, স্নিগ্ধ ও অপূর্ব প্রকৃতির ডাকে সারা দেওয়ার জন্য বাস থেকে নামেন। দাঁড়িয়ে থাকা তাদের বাসটির পেছনে যাওয়া মাত্র আগে থেকে ওতপেতে থাকা ৫/৬ জনের একটি ছিনতাইকারীর দল তাদের উপর এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে হামলা চালায়।

তারা আরও জানান, এতে তারা আহত হন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিন জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আহত তিন জনই কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী।

ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা নাগরিক ফোরামের সহ-সভাপতি নীহার রঞ্জন সরকার জানান, পৈরতলা রেলগেটের এই স্পটটি দীর্ঘ দিন ধরে ছিনতাইয়ের রেড জোন হিসেবে পরিচিত। এর আগেও এই স্পটটিতে একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে দূরপাল্লার বাস যাত্রী ও চালকরা ছিনতাইয়ের কবলে পড়ছেন।

তিনি জানান, এখান দিয়ে গভীর রাতে দূরপাল্লার বিশেষ করে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী এনা, শ্যামলী, সৌদিয়া, মামুন, ইউনিক ও গ্রীনলাইনসহ একাধিক পরিবহন চলাচল করে। প্রায়শই তারা পৈরতলা স্পটটিতে ডাকাত বা ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে। যার কারণে দূরপাল্লার চালকেরা বাইপাস বাদ দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করেন। পরে নাগরিকদের আপত্তির মুখে গভীর রাতে শহরের ভেতর দিয়ে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়  প্রশাসন। এই স্পটটিতে ছিনতাইকারীরা অধরা থাকায় প্রায়শই হচ্ছে ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ঘটনা। সবসময় এসব খবর গণমাধ্যমে আসছে না। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানোর দাবি জানান।

এদিকে, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে যায়। আহতদের খোঁজ খবর নেন। ছিনতাইকারীদের ধরতে তৎপর রয়েছে পুলিশ।