ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যা মামলা তদন্ত করবে পিবিআই

ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যা মামলা পুনরায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেটশনকে (পিবিআই) তদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন জুনায়েদ এ আদেশ দেন। জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

তিনি বলেন, দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলার তদন্ত শেষে সম্প্রতি আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। এতে বলা হয়, দিয়াজকে খুন নয়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। সিআইডির দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি দেন মামলার বাদী দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী। শুনানি শেষে সিআইডির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ করেননি। মামলাটি পিবিআই এর সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তার দ্বারা পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন।

দিয়াজের বড় বোন অ্যাডভোকেট জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা বলেন, ‘তদন্ত সংস্থা সিআইডি দিয়াজ হত্যা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর আমরা আপত্তি জানিয়ে নারাজি দিয়েছি। আদালত নারাজি আবেদন গ্রহণ করে পিবিআইকে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন নির্মাণকাজের দরপত্র নিয়ে কোন্দলের সূত্র ধরে পরিকল্পিতভাবে দিয়াজকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চায়।’

এর আগে মামলা করার ছয় বছর পর তদন্ত সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) গত ২৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট (প্রসিকিউশন) শাখার পরিদর্শক জাকির হোসাইন মাহমুদের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি চট্টগ্রাম জেলার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুস সালাম মিয়া এ  প্রতিবেদন জমা দেন।  প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দিয়াজকে খুন নয়, নিজেই আত্মহত্যা করেছেন।’

২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট এলাকায় ভাড়া বাসার নিজ কক্ষ থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে হাটহাজারী থানা-পুলিশ। পরদিন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। ওই বছরের ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে দেওয়া প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়। দিয়াজের পরিবার ওই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে।

এ ঘটনায় দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী ২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর ১০ জনকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা করেন। এতে আসামি করা হয়– চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, চবি ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি আলমগীর টিপু, ছাত্রলীগ নেতা আবুল মনসুর জামশেদ, তাদের অনুসারী রাশেদুল আলম জিশান, আবু তোরাব পরশ, মনসুর আলম, আবদুল মালেক, মিজানুর রহমান, আরিফুল হক অপু এবং মোহাম্মদ আরমানকে।

পরে দিয়াজের মা জাহেদা আমিনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দিয়াজের লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের আদেশ দেন। ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বর লাশ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ। ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দিয়াজের শরীরে আঘাতজনিত জখমের মাধ্যমে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে।’