তিন লাখ ১৯ হাজার চামড়া বিক্রির জন্য প্রস্তুত চট্টগ্রামের আড়তদাররা

চামড়া বিক্রির জন্য প্রস্তুত চট্টগ্রামের আড়তদাররা। ঢাকার ট্যানারি ও চট্টগ্রামের একমাত্র ট্যানারির কাছে এসব লবণজাত চামড়া বিক্রি করা হবে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু ট্যানারির প্রতিনিধি চট্টগ্রামের আড়তদারদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। আগামী সপ্তাহে বিক্রি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এবার চট্টগ্রামের আড়তদাররা চামড়া সংগ্রহ করেছেন তিন লাখ ১৯ হাজার পিস। যদিও জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের হিসেবে এবার চট্টগ্রামে কোরবানি হয়েছে, আট লাখ ১৭ হাজার ১২৯টি পশু। বাকি চামড়া মৌসুমি ব্যবসায়ী, মাদ্রাসা ও এতিমখানা সংগ্রহ করেছে।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. মুসলিম উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবার সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার লাখ কাঁচা চামড়া সংগ্রহের টার্গেট ছিল। এর মধ্যে সাড়ে তিন লাখ টার্গেট ছিল গরুর। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত আড়তদাররা চামড়া সংগ্রহ তিন লাখ ১৯ হাজার পিস। এর মধ্যে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৫০০ পিস গরুর চামড়া। বাকিগুলো মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার। আড়তদার সমিতির আওতাভুক্ত প্রায় ৪০ জন আড়তদার এসব চামড়া সংগ্রহ করেছি। লবণজাত করে মজুদ করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আড়াতদারদের কেনা এসব চামড়া আগামী সপ্তাহ থেকে বিক্রি শুরু হবে। ঢাকার ট্যানারি ও চট্টগ্রামের একমাত্র রিফ লেদার ট্যানারির কাছে বিক্রি করা হবে। ইতোমধ্যে প্রতিনিধিরা যোগাযোগ শুরু করেছে। এবার চামড়া সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি। আমরা যতটুকু সংগ্রহের আশা করেছিলাম এর চেয়ে কম হয়েছে। আমরা প্রতি পিস চামড়া ২৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায় কিনেছি।’

এদিকে, চট্টগ্রামে মানবিক সংগঠন গাউসিয়া কমিটি সংগ্রহ করেছে এক লাখ ১০ হাজার পিস চামড়া। যে কারণে আড়তে কম চামড়া এসেছে। বিপুল পরিমাণ চামড়া এ সংগঠনের সংগ্রহে আসায় নষ্ট হওয়ার কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে।

গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও মানবিক সেবা টিমের প্রধান সমন্বয়ক মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবার গাউসিয়া কমিটি চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় মিলে এক লাখ ১০ হাজারের বেশি কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেছে। বিক্রির টাকা বিভিন্ন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করছে এমন- গরিব ও মেধাবী ছাত্রদের থাকা-খাওয়ার জন্য ব্যয় করা হয়। জামেয়া মাদ্রাসার অধীনে দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ২০০টি মাদ্রাসা পরিচালিত হয়। এসব মাদ্রাসার শিক্ষক-ছাত্রদের ব্যয় এ ফান্ড থেকেই মেটানো হয়।’

এবার ঈদুল আজহায় চট্টগ্রামে আট লাখ ৭৯ হাজার ৭১৩টি পশু কোরবানি দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা এবং নগরী মিলে আট হাজার ২২০টি খামারে কোরবানিযোগ্য পশু ছিল আট লাখ ৪২ হাজার ১৬৫টি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর বলেন, ‘চট্টগ্রামে এবার সবমিলিয়ে আট লাখ ১৭ হাজার ১২৯টি পশু কোরবানি হয়েছে। এর মধ্যে চার লাখ ৪০ হাজার ৫২১টি গরু, ৬০ হাজার ৩১৪টি মহিষ, দুই লাখ ৩০ হাজার ৪৯৬টি ছাগল ও ৫২ হাজার ৭৪টি ভেড়া কোরবানি হয়েছে। ছাগল, ভেড়া ও ছোট গরু কোরবানি বেশি হয়েছে। তবে বড় গরু বেশি অবিক্রিত রয়েছে।’