ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এরইমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এখন চলছে রেললাইনে শেষ মুহূর্তের কাজ। তবে চূড়ান্তভাবে ট্রেন চলাচলে আরও কিছু সময় লাগবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, রেলপথটি চালু হলে ভারত-বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি সর্ম্পক উন্নয়নের ক্ষেত্রে নব দিগন্তের সূচনা হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। ইতোমধ্যে রেললাইনের স্লিপারের উপর পাথর ফেলা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মিটারগেজ ইঞ্জিনবগি দিয়ে ৬ কিলোমিটার রেলপথ ট্রায়াল দেওয়া হবে।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের টেক্সমেকো রেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ঊর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী রিপন শেখ বলেন, আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে। আগামী ২২ তারিখে আমরা মিটারগেজ রেলপথ ট্রায়াল দিব। আশা করি এর মধ্যে আমাদের সব কাজ হয়ে যাবে। প্রাথমিকভাবে মিটারগেজ ইঞ্জিনবগি দিয়ে ৬ কিলোমিটার রেলপথ ট্রায়াল দেওয়া হবে। সেটি হবে গঙ্গাসাগার রেলস্টেশন থেকে শিবনগর পর্যন্ত। সেখানে আমাদের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের টেক্সমেকো রেল ইঞ্জিনিয়ারিং এম্বাকমেন্ট (বাঁধ) প্রকৌশলী বেনজির আহমেদ বলেন, আমাদের সব কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এখন আমাদের ট্যাক ট্রেকিং এর কাজ চলছে। ট্রায়ালকে কেন্দ্র করে যাবতীয় কাজ এখন চলছে।
এদিকে দুই দেশের স্বপ্নের এই রেলপথ নির্মাণকে কেন্দ্র করে ভারত-বাংলাদেশের বাসিন্দাদের মধ্যে যেন আগ্রহের শেষ নেই।
ভারতীয় নাগরিক ঋষিকেষ বলেন, এখান থেকে কলকাতা যেতে অনেক সময় লাগে। এই রেললাইনটি হয়ে গেলে আমরা যখন বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যাব সেখানে সময় অনেক কম লাগবে। এতে করে আমাদের দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক বাড়বে। জিনিসপত্র আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রেও অনেক সুবিধা হবে।
আগরতলা-ত্রিপুরা-ভারতের ভূবনেশ্বরী টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনীষা পাল চৌধুরী বলেন, রেলপথটি হয়ে গেলে ভ্রমণের জন্য দুই দেশেরই ভালো। একটি দেশের উন্নতি হয় অর্থনৈতিক ভারসাম্যের উপর। দুই দেশের মধ্যে রেললাইনটি হয়ে গেলে মানুষের যাতায়াত বাড়বে। এতে দুই দেশেরই অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে। পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যও বাড়বে।
এদিকে বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম জানান, এখন আমাদের প্রায় ১০ কিলোমিটার ট্রেন চালানোর মতো ব্যবস্থা হয়ে গেছে। আগামী ২২ আগস্ট মঙ্গলবার পরীক্ষামূলকভাবে পাথরবাহী একটি লোকোমটিভ (ইঞ্জিন) বগিসহ এই রেলপথের উপর দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চলানো হবে। সেটি চলে যাবে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের সীমান্তের শূন্যরেখায়। এর জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আখাউড়া গঙ্গাসাগর থেকে ভারতের ত্রিপুরা শিবনগর পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে এই রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪০ কোটি টাকা।