খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তদন্তপূর্বক উক্ত ফলাফল স্থগিতের দাবি জানিয়েছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)। রবিবার (৮ অক্টোবর) পিসিপি’র সভাপতি অংকন চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
নেতৃদ্বয় বলেন, “খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে ০৮ এপ্রিল ২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষা এবং চলতি বছরের ২ হতে ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের রোল নম্বর ক্রমানুসারে কর্তৃপক্ষ তাদের ওয়েবসাইটে গত ৬ অক্টোবর প্রকাশ করেন। লিখিত পরীক্ষায় ফেল তবুও চূড়ান্ত ফলাফলে ৭৭১ রোল নম্বর রয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ ‘মুদ্রণজনিত ভুল’ উল্লেখ করে পুনরায় ফলাফল প্রকাশ করলে দেখা যায় চূড়ান্ত ফলাফল থেকে আরও ৪ জন প্রার্থীকে বাদ দিয়ে নতুন ৪ জনকে সংযুক্ত করা হয়েছে। এতেই স্পষ্ট হয় নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে।”
তারা আরও বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত জেলা পরিষদের এক সদস্যের বক্তব্যের বরাতে জানতে পারি যে, ২৫৭টি পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও পরে ৩৩৭ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সংশোধনীতে ৩৩৬ জনের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। শূন্য পদের প্রকৃত সংখ্যার তারতম্য থেকে অনিয়মের প্রমাণ স্পষ্ট হয়।’
তাদের দাবি, জেলা পরিষদের প্রাথমিক শিক্ষকসহ সকল নিয়োগে লাখ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু জবাবদিহিতার অভাবে অপরাধীরা বরাবরই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান। শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তি হচ্ছে প্রাথমিক পর্যায়। পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো নিয়োগ বাণিজ্য ও দুর্নীতির আকড়াতে পরিণত হওয়ায় পার্বত্য অঞ্চলে দক্ষ শিক্ষকের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এতে প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অবিলম্বে ফলাফল স্থগিত করে অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানান তারা।
এ ছাড়াও সম্মিলিত ছাত্র সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন করেছে চাকরিপ্রার্থীরা। রবিবার সকালের দিকে খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বরে মানববন্ধন করেন তারা। জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণে শিক্ষক নিয়োগে ঘুষ-দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি হয়েছে উল্লেখ করে তারা পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করার দাবি জানান।