বিএনপির বহিষ্কৃত একরামুজ্জামানের মনোনয়নপত্র বৈধ, আওয়ামী লীগের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী বাতিল

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ৫৫ জনের মধ্যে ১০ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪৫ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

রবিবার (০৩ ডিসেম্বর) বিকালে যাচাই-বাছাই শেষে তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল ও বৈধ ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহগীর আলম। এর আগে সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে ছয়টি আসনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হয়।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহগীর আলম বলেন, ‘যাচাই-বাছাইকালে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর, আয়কর রিটার্ন না থাকায় এবং মনোনয়নপত্র পূরণে ক্রটি থাকায় ওসব প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়। এর মধ্যে ৯ জন স্বতন্ত্র ও একজন বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে ৯ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য বি.এম. ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, স্বতন্ত্র উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রোমা আক্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এটিএম মনিরুজ্জামান সরকার, জাতীয় পার্টির মো. শাহানুল করিম, স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃত কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান, জাকের পার্টির মো. জাকির হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের মো. ইসলাম উদ্দিন, ওয়ার্কার্স পার্টির মোহাম্মদ বকুল হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান। এর মধ্যে এটিএম মনিরুজ্জামান, রোমা আক্তার ও আব্দুল মান্নানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। বাকি ছয় জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে ১১ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহজাহান আলম সাজু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈনউদ্দিন মঈন (স্বতন্ত্র), অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ (জাতীয় পার্টি), মো. রেজাউল ইসলাম (জাতীয় পার্টি), জিয়াউল হক মৃধা (স্বতন্ত্র), ছৈয়দ জাফরুল কদ্দুস (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন), মাইনুল হাসান (তৃণমূল বিএনপি), মো. রাজ্জাক হোসেন (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি), মো. আবুল হাসনাত (ইসলামী ঐক্যজোট), জহিরুল ইসলাম জুয়েল (জাকের পার্টি) ও কাজী মাসুদ আহম্মেদ (বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি)। তাদের সবার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনে ১২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ফিরোজুর রহমান ওলিও (স্বতন্ত্র), মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া (জাতীয় পার্টি), সেলিম কবির (জাকের পার্টি), সৈয়দ মো. নূরে আজম (বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট), মো. আব্দুর রহমান খান ওমর (জাসদ), মাওলানা মজিবুর রহমান (বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন), মো. জহিরুল হক চৌধুরী (স্বতন্ত্র), মো. কাজী জাহাঙ্গীর (স্বতন্ত্র), সৈয়দ মাহমুদুল হক আক্কাস (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি), সোহেল মোল্লা (বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি) ও জামাল রানা (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন)। এর মধ্যে ফিরোজুর রহমান ওলিও, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী ও মো. কাজী জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। বাকিদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। ফিরোজুর রহমান ওলিও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে পাননি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে ছয় প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুবারের সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তারেক এ আদেল (জাতীয় পার্টি), মো. জাহাঙ্গীর আলম (জাকের পার্টি), শাহীন খান (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি), বজলুর রহমান মিলন (বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টি) ও সৈয়দ জাফরুল কদ্দুস (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন)। এর মধ্যে বজলুর রহমান মিলনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। বাকিদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে ১১ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফয়জুর রহমান বাদল, ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম মমিনুল হক সাঈদ (স্বতন্ত্র), কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), মোবারক হোসেন দুলু (জাতীয় পার্টি), মোহাম্মদ আক্তার হোসেন সাঈদ (জাসদ), মেহেদী হাসান (ইসলামী ঐক্যজোট) মো. জামাল সরকার (বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি), মো. মোস্তাক আহমেদ (স্বতন্ত্র), মো. জামসেদ মিয়া (জাকের পার্টি) ও ছৈয়দ জাফরুল কদ্দুস (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন) ও হাবিবুর রহমান (তৃণমূল বিএনপি)। এর মধ্যে নজরুল ইসলাম ও মোস্তাক আহমেদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। বাকিদের বৈধ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনে ছয় জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য তাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন (জাতীয় পার্টি), মো. আব্দুর আজিজ (জাকের পার্টি), সফিকুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), কবির মিয়া (বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি) ও সফিকুল ইসলাম (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি)। এর মধ্যে সফিকুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। বাকিদের বৈধ।

মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান ওলিও বলেন, ‘আমি মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করবো।’