ইতালি যাওয়ার ২০ বছর পর রোমান বধূ নিয়ে বরগুনায় নাসির

কাজের সন্ধানে ইতালি গিয়ে রোমানিয়ার নারী সিমনার সঙ্গে পরিচয় হয় বরগুনার নাসির মাতুব্বরের। পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের চার বছর পর বিয়ে করেন তারা। সবশেষ স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দেশে ফিরেছেন নাসির।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় তাদের বহনকারী হেলিকপ্টার আমতলী পৌরসভার ঈদগাহ মাঠে অবতরণ করে। একই দিন সকালে ইতালি থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন এই দম্পতি। নাসির মাতুব্বর (৪৫) আমতলী পৌর শহরের কালিবাড়ী এলাকার সোনা মাতুব্বরের ছেলে।

আমতলী পৌরসভার ঈদগাহ মাঠে অবতরণের পর বিদেশি বধূকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন নাসিরের স্বজনরা। সেখান থেকে বাড়ি ফিরলে তাদের দেখতে ভিড় জমান আশপাশের মানুষজন।

নাসিরের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাজের সন্ধানে ২০০৩ সালে ইতালি পাড়ি জমান নাসির। চার বছরে ছয় দেশ পাড়ি দিয়ে ২০০৭ সালে ইতালি পৌঁছেন। সেখানে বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়। কাজের সুবাদে রোমানিয়ার নারী সিমনার (৪০) সঙ্গে পরিচয়। সিমনাও কাজের সন্ধানে রোমানিয়া থেকে ইতালিতে এসেছিলেন। পরিচয়ের সূত্রে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চার বছর প্রেমের পর ২০১৩ সালে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের আগে খ্রিষ্টান থেকে মুসলিম হন সিমনা। এই দম্পতির দাবিদ হোসেন নামে পাঁচ বছরের এক ছেলে আছে। নাসির বর্তমানে গার্মেন্টসের ব্যবসা করেন। সেখানে কাজ করছেন সিমনা।

২০০৩ সালে বাংলাদেশ ছেড়ে ছয় দেশ পাড়ি দিয়ে ২০০৭ সালে ইতালি পৌঁছেছি উল্লেখ করে নাসির মাতুব্বর বলেন, ‘জীবন বাজি রেখে ইতালি গিয়েছিলাম। যেতে অনেক কষ্ট হয়েছিল। সেখানে কাজের সুবাদে সিমনার সঙ্গে পরিচয়। পরে প্রেম, প্রেম থেকে বিয়ে। আমরা এখন ভালো আছি। মূলত বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দেশে এসেছি। কয়েকদিন বাড়িতে থেকে আবার ইতালি চলে যাবো।’

বিদেশি পূত্রবধূকে পেয়ে খুশি নাসির মাতুব্বরের বাবা-মা। তারা পূত্রবধূ ও নাতিকে বরণ করে নিয়েছেন। নাসিরের বাবা সোনা মাতুব্বর বলেন, ‘পূত্রবধূকে দেখতে আসছেন গ্রামবাসী। বিয়ের সময় ছেলে আমাদের জানিয়েছিল। কিন্তু এতদিন নানা জটিলতার কারণে আসতে পারেনি। তবে ভিডিও কলে কথা হতো। কিছুটা বাংলা ভাষাও বলতে পারে। তবে সব কথা আমরা বুঝি না। তারা আসায় আমরা অনেক খুশি হয়েছি।’

শ্বশুর-শাশুড়িকে দেখতে আসার অনুভূতি জানিয়ে সিমনা বলেন, ‘এখানের পরিবেশ ভালো লেগেছে, ফুল দিয়ে আমাদের বরণ করে নিয়েছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আতিথিয়েতা ও সবার ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। স্বামী-সন্তান নিয়ে বেশ ভালো আছি। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘প্রবাসী দম্পতি বাড়িতে আসার বিষয়টি আমাদের জানিয়েছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের সুন্দরভাবে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে পুলিশ।’