‘বিচারকরা কোর্টে অলস সময় কাটান না, তারপরও মামলা শেষ হচ্ছে না’

মামলার জোট কমাতে গেলে বিচারকের সংখ্যা বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। শুক্রবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালত প্রাঙ্গণে বিচার প্রার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা মন্তব্য করেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মামলা জট এটা নতুন কিছু নয়, এটা একটি পুরাতন ব্যাধি। মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। সেজন্য মামলা জট বাড়ছে। মানুষ লেখাপড়া যত শিখছে- এতে মনে হয় এক ধরনের অস্থির প্রবণ হয়ে উঠছে। এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে বোঝাতে হবে।’

প্রধান বিচারপ্রতি বলেন, ‘শুধু মামলা মামলা মোকদ্দমা করেই সমস্যার সমাধান হয় না। বিকল্প ব্যবস্থা আছে। আগে গ্রামের সালিশ ছিল। আইন করে সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেটাকে যদি জনপ্রিয় করা যায়। তাহলে মামলা জট কিছুটা কমবে।’

তিনি বলেন, ‘যে পরিমাণ বিচারক সারা বাংলাদেশে থাকা দরকার সেই পরিমাণ নেই। হিসাব অনুযায়ী ৯০ থেকে ৯৫ হাজার মানুষের জন্য একজন বিচারক। একেবারে সহকারী জজ থেকে প্রধান বিচারপতি পর্যন্ত। এত কম বিচারক দিয়ে মামলা জট কমানো সম্ভব নয়। আমরা প্রতিবছর জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে ১০০ বিচারক নিয়োগ করতে পারি। এই সংখ্যাটা বাড়াতে হবে। লজিস্টিক সাপোর্টসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিচারকরা কোর্টে অলস সময় কাটান না। তারা কাজ করে যাচ্ছেন। তারপরও মামলার শেষ হচ্ছে না। মামলা আরও বাড়ছে। এক বছর যদি থাকে ৫০০ মামলা পরের বছর দেখা যায় ৫৫০ হয়ে গেছে।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মানুষ বাড়ছে। জমি জমার দাম বেড়েছে। খামাখা মামলা হয়। অনেকে মামলা এমনিতেই করেন। আমরা যে বিষয়টা পারিবারিকভাবে সামাজিকভাবে সমাধান করতে পারি সেটা না করে আদালতে চলে যাই। সেজন্য মামলা বাড়ছে, বিচার প্রার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে। আশা করি এর একটা সমাধান হবে।’

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘আমি এবং আমরা সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে সরকারকে বলবো এ বিষয়ে যেন আরও নজর দেন। বিচারক সং সংখ্যা যেন বাড়ানো যায় সে চেষ্টা যেন তারা করেন।’

এ সময় প্রধান বিচারপতি সঙ্গে ছিলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ পারভেজ, নারী শিশু আদালতের বিচারক ফারুক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুল আলম খোকন সহ বিচারক ও আইনজীবীরা।