যাওয়া হলো না ইতালি, পাশাপাশি কবরে শায়িত পরিবারের ৫ সদস্য

ঢাকার বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে মারা যাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একই পরিবারের পাঁচ জনের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার (১ মার্চ) বিকালে আসর নামাজের পর উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের খন্দকার বাড়ি জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তাদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় আত্মীয়স্বজন, গ্রামবাসীসহ অনেকে অংশগ্রহণ করেন। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি তাদের মরদেহ দাফন করা হয়। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে পুরো এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর মগবাজারের বাসা থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে যান ইতালিপ্রবাসী সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউছার। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (৪০), দুই মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া (১৯), সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর (১৩) ও একমাত্র ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহ (৮)। সেখানে আগুনে পুড়ে সবাই মারা যান। মুহূর্তে পরিবারটি শেষ হয়ে যায়।

নিহতদের স্বজনরা জানান, শাহবাজপুর গ্রামের মৃত সৈয়দ আবুল কাশেমের ছেলে সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার (৪২) দীর্ঘদিন ইতালিতে ব্যবসা করছিলেন। মাসখানেক আগে দেশে আসেন। ইতালিতে তিনি স্থায়ীভাবে (গ্রিন কার্ড) থাকার সুযোগ পেয়েছেন। সম্প্রতি স্ত্রী ও তিন সন্তানকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ভিসাও হয়ে গেছে সবার। কিন্তু ইতালি আর যাওয়া হলো না তাদের। বেইলি রোডের আগুনে পুড়ে স্ত্রী-সন্তানসহ মারা গেছেন মোবারক।

মা হেলেনা বেগম জানান, সবাইকে নিয়ে একটি রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেতে যায় মোবারক। সঙ্গে ছিল স্ত্রী স্বপ্না, দুই মেয়ে সৈয়দা কাশফি, সৈয়দা নূর এবং একমাত্র ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহ। আগুনে পুড়ে সবাই মারা গেছেন। এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেন তিনি।

স্বপ্নার বড় বোন পলি আক্তার বলেন, ‘ছোট বোন, বোনের স্বামী সন্তানসহ পরিবারের সবাই আগুনে পুড়ে মারা গেছেন। মৃত্যুর আগে তারা মোবাইলে কল করে আহাজারি করছিলেন বাঁচার জন্য। আমরা তাদের বাঁচাতে পারিনি। এই বলে তিনি কাঁদতে থাকেন।’

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় বেইলি রোডে একটি বহুতল ভবনে আগুন লাগে। এতে এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।