সরকারনির্ধারিত দামে আপত্তি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তৃতীয় দিনের মতো বন্ধ মাংস বিক্রি

টানা তৃতীয় দিনের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাজারে মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। সরকারিভাবে মাংসের দাম নির্ধারণ করায় সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল থেকে এই কর্মসূচি চলছে। এতে বাজারে মাংস কিনতে এসে কাঙ্ক্ষিত মাংস না পেয়ে অনেকটাই বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা।

মাংস ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরকার প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এই টাকায় মাংস বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তাদের দাবি, আগের ৭৫০ টাকা কেজিপ্রতি মূল্য বহাল রাখার। এই দাবি পূরণ করা না হলে মাংস বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

মেড্ডা বাজারের মাংস বিক্রেতা অহিদ মিয়া বলেন, ‘আমরা মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) জেলা প্রশাসকের কাছে আমাদের দাবির কথা বলে এসেছি। এখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যদি কেউ সরকারি দামে মাংস বিক্রি করতে পারে অবশ্যই করবে। আমরা সরকারি দামে মাংস বিক্রি করতে পারবো না। কারণ, আমাদের এর চেয়ে বেশি দামে গরু কিনে আনতে হয়। গরু কিনে দোকান খরচ, কর্মচারী খরচ দিয়ে এ দামে আমরা বিক্রি করতে পারবো না। দাম দিয়ে গরু কিনে এনে ব্যবসার ক্ষতি করে ব্যবসা করতে পারবো না।’

একই কথা জানান ব্যবসায়ী জাকির মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা ৬৬৪ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা কেজিপ্রতি বিক্রির দাবি জানিয়েছি। কিন্তু সরকারের তাদের দামের ব্যাপারে অনড়। এজন্য আমরা বিক্রি বন্ধ রেখেছি। যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ ছাড়া আমরা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারবো না।’

এদিকে পবিত্র রমজান মাসে বাজারে এসে কাঙ্ক্ষিত গরুর মাংস কিনতে না পেরে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মেড্ডা বাজারে মাংস কিনতে আসা ক্রেতা মো. সায়েম বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাংসের বাজারে মাংস বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এতে খুব বেশি ভোগান্তির মধ্যে পড়েছি আমরা। রমজান মাস হওয়ায় দাওয়াত করতে হয়। তখন মাংসের প্রয়োজন হয়। এমন পরিস্থিতিতে নিরুপায় হয়ে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে রাজধানী ঢাকার খলিলের কাছ থেকে ৫৫০ টাকা দরে মাংস কিনে এনেছি।’ দ্রুত সমস্যা সমাধানের দাবি জানান তিনি।

এদিকে জেলার কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, ‘মাংসের বাজারে অস্থিরতা ও চলমান সমস্যা নিয়ে মঙ্গলবার বিকালে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মাংস ব্যবসায়ীদের বৈঠক হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বৈঠকে জেলা প্রশাসক স্যার সরকারনির্ধারিত মূল্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বলে জেনেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কৃষি বিপণন অধিদফতর থেকে এতটুকু বলতে পারি, সরকারনির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি মূল্যে কেউ বিক্রি করলে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। কোনও অসাধু ব্যবসায়ীকে বাজারে অনৈতিক সুবিধা বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না।’