মন্দির কমিটি দেওয়ায় এমপির বিরুদ্ধে মামলা

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী শ্রী শ্রী রাধা মাধব জিউ আখড়া (চৌমুহনী দেবালয়) মন্দির পরিচালনা কমিটির অনুমোদন দেওয়ায় স্থানীয় সাংসদ (নোয়াখালী-৩) মামুনুর রশিদ কিরনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বেগমগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মন্দিরের পক্ষে তপন চন্দ্র মজুমদার ও গণেশ চন্দ্র কুরী এ মামলা করেন। পরে মঙ্গলবার ও বুধবার দুই দফায় মামলার শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য রেখেছেন বলে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী মজিবুল হায়দার চৌধুরী।

মামলার বাদী তপন চন্দ্র মজুমদার বলেন, চৌমুহনী শ্রী শ্রী রাধা মাধব জিউর আখড়া তথা চৌমুহনী দেবালয়ের নিজস্ব গঠনতন্ত্র রয়েছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যুগ যুগ ধরে মন্দির পরিচালনায় কমিটি করা হয়। হিন্দু কমিউনিটির লোকজন মূলত এ কমিটির নির্বাচন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় মন্দির পরিচালনায় ২০২২ সালের ১৪ মে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট মন্দির পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি চার বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালের ১৪ মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করার কথা। সে অনুযায়ী প্রায় দুই বছরের কাছাকাছি মন্দির পরিচালনাও করে আসছে ওই কমিটি। কিন্তু হঠাৎ মন্দিরের গঠনতন্ত্র বহির্ভূতভাবে নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরন নতুন করে কমিটি গঠনের জন্য ১৪ মার্চ স্বাক্ষরিত তার নিজস্ব প্যাডে পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে তাদেরকে দায়িত্ব দেন।

তিনি আরও জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই পাঁচ জন মাত্র এক দিনের মাথায় ১৫ মার্চ একটি ৫১ জন বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে তা এমপি মামুনুর রশিদ কিরনের সামনে উপস্থাপন করলে তিনি ১৬ মার্চ নিজে স্বাক্ষর দিয়ে ওই কমিটির অনুমোদন দেন। যা মন্দিরের গঠনতন্ত্রের বহির্ভূত।

মামলার অপর বাদী গণেশ চন্দ্র কুরী বলেন, সংসদ সদস্য মন্দির কমিটি গঠন বা গঠনের লক্ষ্যে তার নিজ প্যাডে স্বাক্ষর দিয়ে কাউকে কোনও দায়িত্ব দিতে পারেন না। শতবর্ষী এ মন্দিরে এর আগে এমন ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মন্দির কমিটি নিয়ে তা হিন্দু কমিউনিটির জন্য কোনোভাবেই মঙ্গলজনক নয়। এতে করে মারামারির অবস্থাও তৈরি হতে পারে। যার কারণে বাধ্য হয়ে আদালতে গেছি।

হিন্দু ধর্মাবলম্বী একাধিক ব্যক্তি জানান, মন্দির পরিচালনা কমিটির কয়েকজন নেতা সদ্য শেষ হওয়া দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে মামুনুর রশিদ কিরনের প্রতিপক্ষ ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী মিনহাজ আহমেদ জাবেদের পক্ষে নির্বাচন করায় ক্ষোভ থেকে তিনি এমন ঘটনা ঘটিয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

এ বিষয়ে জানতে এমপি মামুনুর রশিদ কিরনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিলেও তিনি কল রিসিভ না করে কেটে দেন। তাই বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।