রোহিঙ্গাদের বাসা ভাড়া দিলে নেওয়া হবে আইনি ব্যবস্থা

উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে বাসা বা বাড়ি ভাড়া দেওয়া হলে মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ভাড়া দেওয়া বাসা থেকে নামিয়ে দিতে সময়সীমা বেঁধে দেন পুলিশ সুপার।

বুধবার (৩ এপ্রিল) টেকনাফ রঙ্গিখালী মাদ্রাসা মাঠে কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের উদ্যোগে অপরাধ প্রতিরোধ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা ক্রমাগত বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা মাদক ব্যবসা, চুরি-ডাকাতিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যাচ্ছে। এসব অপরাধের পাশাপাশি একটি চক্রের ইন্ধনে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টাও করছে তারা। টেকনাফে যেসব অপহরণ সংঘটিত হচ্ছে, এসব ঘটনার পেছনে রয়েছেন রোহিঙ্গারা। আমরা অপরাধীদের শিকড় সন্ধান করে তা কেটে দেবো। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গারা বেরিয়ে অবাধ বিচরণের কারণে উখিয়া-টেকনাফে অপহরণ বাড়ছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে বাঙালিদের টার্গেট করে। পরে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে। টেকনাফে পুলিশে আরও জনবল বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।’

শামলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নে ২৭ কিলোমিটার এলাকা গহিন পাহাড়। এখানে পাহাড়কেন্দ্রিক অপহরণ চক্র গড়ে উঠেছে। আমাদের এলাকায় একটিমাত্র পুলিশ ফাঁড়ি আছে। যেখানে পুলিশের সংখ্যা মাত্র ৭-১০ জন। এত কমসংখ্যক জনবল দিয়ে অপরাধ দমন সম্ভব না। তাই পুলিশে জনবল বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।’

টেকনাফ হোয়াইক্যং এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘আমাদের এলাকায় বেশির ভাগ মানুষ জুম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ কর। জুম চাষে গেলে সেখান থেকে সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করে। এখন জুমচাষিরাও ভয়ে আর যায় না। এতে মানুষের মাঝে আতঙ্ক বাড়ছে। এজন্য পাহাড়গুলোতে যৌথ অভিযানের দাবি জানাচ্ছি।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম, উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন, টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গনি, টেকনাফ কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি বাহাদুর এবং উখিয়া ও টেকনাফের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ স্থানীয়রা।