নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে বাস, খবর পেয়েও বিশ্রামকক্ষে হাইওয়ে থানার কর্মকর্তা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় দিগন্ত পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পার্শ্ববর্তী খাদে পড়ে অন্তত ১৫ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। বুধবার (০৩ এপ্রিল) বিকাল ৩টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রামপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা বাস থেকে আহতদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জের মাধবপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে আসছিল দিগন্ত পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস। বিজয়নগর উপজেলার রামপুর এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশে খাদে পড়ে যায়। এতে ১৫ যাত্রী আহত হন। স্থানীয়রা পাশের হাইওয়ে থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশের রেকার বাসটি উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। এ সময় রেকার গাড়ির সঙ্গে পুলিশের সোর্স ছাড়া কোনও পুলিশ সদস্য ছিলেন না।

এ বিষয়ে জানতে বাংলা ট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধি দুর্ঘটনাস্থলের পাশের খাটিহাতা হাইওয়ে থানা পুলিশের দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সালাউদ্দিনকে একাধিকবার ফোন দিলেও ধরেননি। একপর্যায়ে থানায় চলে যান এই প্রতিনিধি। থানার অফিস কক্ষে গিয়ে সালাউদ্দিনকে পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে এই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে সহকর্মীরা খবর পাঠান। কিছুক্ষণ পর থানার তিনতলার বিশ্রামকক্ষ থেকে সালাউদ্দিন নেমে আসেন। তার অফিস কক্ষের সামনে সাংবাদিকদের দেখেই ক্ষুব্ধ হন। বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়েছি। আপনারা ঘটনাস্থলে চলে যান, সেখানে আমার লোক গেছে। থানায় এসেছেন কেন?’

ঘটনাস্থলে কোনও পুলিশ সদস্য নেই, আপনাকে ফোন দিলেও রিসিভ করেননি; এজন্য থানায় এসেছি জানালে সালাউদ্দিন বলেন, ‘এত বড় এলাকা, দুর্ঘটনা ঘটলে হাইওয়ে পুলিশ কি করবে?’ 

সাংবাদিকদের সঙ্গে দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তার এমন অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়টি কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশ সুপার এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপারকে জানান সাংবাদিকরা। তারা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বে থাকা হাইওয়ে থানা পুলিশ কর্মকর্তার ঘটনাস্থলে যাওয়া উচিত ছিল। তিনি তা না করে কেন বিশ্রামকক্ষে ছিলেন এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হবে।