এইচএসসি ও সমমান

বেড়িবাঁধ ভেঙে জনপদ প্লাবিত, ফেনীর দুই উপজেলায় মঙ্গলবারের পরীক্ষা স্থগিত

ফেনীতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। এতে জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার এইচএসসি ও সমমানের আজকের (মঙ্গলবার) পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আজ বাংলা দ্বিতীয়পত্র বিষয়ে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আজকের পরীক্ষা স্থগিতের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। বিষয়টি আমরা তিন বোর্ডকে (সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড ও ভোকেশনাল) চিঠির মাধ্যমে অবগত করি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এবার ফুলগাজীতে চারটি ও পরশুরামে দুটি কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’

ফুলগাজীর উত্তর দৌলতপুর এলাকার এইচএসসি পরীক্ষার্থী রায়হান হোসেন বলেন, ‘বন্যার পানিতে রাতে ঘরে পানি ওঠায় খুব কষ্টে আছি। পড়াশোনা করাও সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে আমাদের পরীক্ষায় বসা সম্ভব না। সকালে কষ্ট করে কেন্দ্রে আসার পর পরীক্ষা স্থগিতের কথা জেনেছি।’

এ ব্যাপারে ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের তিনটি অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আজকের পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়ে আবেদন করা হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এবার উপজেলায় চারটি কেন্দ্রে ১ হাজার ১ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।’

কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘মঙ্গলবারের স্থগিত পরীক্ষা কবে নেওয়া হবে তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।’

চলতি বছর পরশুরাম উপজেলায় এইচএসসিতে ৬৮৯ জন, আলিমে ১৩০ জন এবং ফুলগাজী উপজেলায় এইচএসসি ও ভোকেশনালে ৮৯৩ জন, আলিমে ১০৮ জন পরীক্ষা দিচ্ছেন।

উল্লেখ্য, ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চারটি স্থান ভেঙে জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে ফেনীর ফুলগাজীর মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধে ৩টি জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।