স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার (১৮ আগস্ট) চট্টগ্রাম (তৃতীয়) অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত এ আদেশ দেন। বাবুল আক্তারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গত বুধবার (১৪ আগস্ট) একই আদালতে জামিন আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদালত আজ (রবিবার) আদেশের জন্য দিন ধার্য রাখেন। এর আগে, গত ৮ আগস্ট বিশেষ দরখাস্তের মাধ্যমেও জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করেন বাবুল আক্তারের আইনজীবী। আদালত শুনানি শেষে ওই দিন জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন বলেন, ‘বাবুল আক্তার দীর্ঘ তিন বছর তিন মাস কারাগারে বন্দি আছেন। বুধবার আদালতে তার জামিন আবেদন করা হয়। শুনানিতে জামিনের বিষয়ে আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত আজ (রবিবার) আদেশের দিন ধার্য রেখেছিলেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছেন। আমরা উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাবুল আক্তারের মামলায় ৯৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মাহমুদা খানম মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পরদিন বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় তিন জনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতের আদেশে ২০২১ সালে মামলাটি হস্তান্তর করা হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই)। ২০২১ সালের ১১ মে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চট্টগ্রাম পিবিআই কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। এর পরদিন ১২ মে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলন করে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘মিতু হত্যার সঙ্গে তার স্বামী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছি আমরা।’
ঢাকায় ওই সংবাদ সম্মেলনের পর সেদিনই চট্টগ্রামে আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন পিবিআইয়ের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা। ওই দিনই মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বাবুল আক্তারকে প্রধান করে মোট ৯ জনকে আসামি করা হয়।
এ মামলায় তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তদন্ত সংস্থা পিবিআই বাবুল আক্তারসহ সাত জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ওই বছরের ১০ অক্টোবর আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেন। ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। চলতি বছরের ৯ এপ্রিল থেকে এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।