চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত পথচারী কিশোর সাইমুন (১৪) মারা গেছেন। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে রাজধানীর সুপার ম্যাক্স হেলথকেয়ারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাইমুনের বাবা মো. ইউনুস। সাইমুন হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার মিঠানিয়া ব্রিজের পাশে এসএস বিল্ডিংয়ের চারতলায় ভাড়া থাকতো। ওই এলাকার হিফজ খানায় হিফজুল কুরআন বিভাগে পড়াশোনা করতো।
সাইমুনের বাবা মো. ইউনুস বলেন, ‘সাইমুন আমার একমাত্র ছেলে। ঘটনার সময় একটি কাজে হাজীগঞ্জ বাজারে যাচ্ছিল। সেখানে বড় মসজিদে এশার নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার জন্য সাধনা ওষুধালায়ের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় বিএনপির সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। ওই অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি উদ্ধার করে প্রথমে হাজীগঞ্জ মুন হসপিটালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লায় পাঠানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে শনিবার দুপুরে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ৮টার দিকে সুপার ম্যাক্স সুপার ম্যাক্স হেলথকেয়ারে তার মৃত্যু হয়।
সাইমুনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনও থানায় কোনও অভিযোগ কিংবা মামলা হয়নি। মামলা হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
হাজীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাতে সরদার বাড়ি ও টোরাগড় গ্রামের বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। আহতরা হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় হাজীগঞ্জ বাজারের কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করা হয়। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শনিবারও হাজীগঞ্জ বাজারে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। শনিবার সকাল থেকে হাজীগঞ্জ মকিমাবাদ ও টোরাগড় এলাকায় যৌথবাহিনী অভিযানে নেমে দুই জনকে আটক করেছে।
অপরদিকে, দুদিনের সংঘর্ষের মধ্যে হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি, পৌর বিএনপির অধীনস্থ সব কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এছাড়া উপজেলা যুবদল ও ছাত্রদলের সব ইউনিটের কমিটি বিলুপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি।