বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) বহরে শিগগিরই যুক্ত হচ্ছে আরও দুটি জাহাজ। নিজস্ব অর্থায়নে জাহাজ দুটি কিনছে বিএসসি। ইতোমধ্যে জাহাজ কিনতে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরেই নতুন দুটি জাহাজ যুক্ত হবে বিএসসির বহরে, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বিএসসি’র সূত্র জানিয়েছে, বিএসসি প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো নিজস্ব অর্থায়নে দুটি জাহাজ কেনার জন্য গত ৪ জুন থেকে দরপত্র বিক্রি শুরু করেছে। ১৫ জুলাই পর্যন্ত দরপত্র গ্রহণ করা হবে, ১৬ জুলাই দরপত্র খোলা হবে। এরপর ১৭ জুলাই থেকে দরপত্র যাচাই-বাছাই শেষে মনোনীত দরদাতাকে কার্যাদেশ দেওয়া হবে। জাহাজ দুটি হবে বাল্ক ক্যারিয়ার। যার ধারণক্ষমতা হবে ৫৫ হাজার থেকে ৬৬ হাজার টনের মধ্যে।
বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মাহমুদুল মালেক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বর্তমানে বিএসসির বহরে পাঁচটি জাহাজ রয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে দুটি জাহাজ কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এর মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য প্রতিষ্ঠানকেই জাহাজ কেনার কার্যাদেশ দেওয়া হবে। আশা করছি সব ঠিক থাকলেই আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে জাহাজ দুটি দেশে আসবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাধীনতার মাত্র এক বছর পর ১৯৭২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে বিএসসি। ১৯৭২ সালে ‘বাংলার দূত’ ও ১৯৭৩ সালে ‘বাংলার সম্পদ’ নামে জাহাজ যুক্ত হয় বিএসসিতে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিএসসি এ পর্যন্ত ৪৪টি জাহাজ সংগ্রহ করে। বয়সের কারণে একের পর এক স্ক্র্যাপ হওয়া এবং দুর্ঘটনাজনিত কারণসহ ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৩৯টি জাহাজ বিক্রি করা হয়। গেলো বছরের অক্টোবরে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ৩৭ বছরের পুরনো এমটি বাংলার সৌরভ ও এমটি বাংলার জ্যোতি জাহাজ দুটি অগ্নিকাণ্ডে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই দুটি জাহাজ স্ক্র্যাপ হিসেবে পরবর্তী সময়ে ৫৫ কোটি টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হলে বিএসসিতে জাহাজের বহর নেমে আসে মাত্র পাঁচটিতে।
বর্তমানে বিএসসির বহরের জাহাজগুলো হলো এমভি বাংলার জয়যাত্রা, এমভি বাংলার অর্জন, এমটি বাংলার অগ্রগতি, এমটি বাংলার অগ্রযাত্রা এবং এমটি বাংলার অগ্রদূত।
এর মধ্যে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২৪৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা বার্ষিক মুনাফা করেছে বিএসসি। এটি সংস্থাটির ৫৩ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মুনাফার মাইলফলক বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এর আগের বছর ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ২৪৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা নিট মুনাফা করেছিল।