আলোচিত ‘অপারেশন ঈগল হান্টের’ ঘটনায় সাবেক এসপি আসাদুজ্জামান রিমান্ডে

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে আলোচিত জঙ্গিবিরোধী অভিযান ‘অপারেশন ঈগল হান্টের’ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নোয়াখালীর সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের তৎকালীন এডিসি মো. আসাদুজ্জামানের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন চৌধুরী এ আদেশ দেন। বিকাল ৩টার দিকে আসাদুজ্জামানকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। এ সময় আসামিপক্ষ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করে। শুনানি শেষে দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। আসাদুজ্জামান সবশেষে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার ছিলেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এসএম শাকিল আহম্মেদ জানান, এদিন সকালে নোয়াখালী কারাগার থেকে আসাদুজ্জামানকে শিবগঞ্জ আমলী আদালতে হাজির করা হয়। শিবগঞ্জে আলোচিত জঙ্গিবিরোধী অভিযান ‘অপারেশন ঈগল হান্টের’ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোসহ পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল ওদুদ বলেন, ‘২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল গভীর রাতে পুলিশের বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা মিলে যড়যন্ত্র করে শিবগঞ্জের একটি বাড়িতে জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন। জঙ্গি নাটকের ঘটনা সৃষ্টি করে আবুল কালাম আবু নামে এক মুদি দোকানিকে হত্যা করা হয়। পরে হেলিকপ্টারে আরও তিনটি বস্তাবন্দি লাশ এনে ওই বাড়িতে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাদের পেটে বোমা বেঁধে রেখে রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা বিস্ফোরণ ঘটায়। নৃশংস এই ঘটনার সাত বছর পর ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেন নিহত আবুর স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন। এই মামলায় সাবেক এসপি ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের তৎকালীন এডিসি আসাদুজ্জামানের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।’

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, পুলিশ অফিসার ও পুলিশের বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা মিলে যড়যন্ত্র করে আমার বাড়িতে বানোয়াটভাবে জঙ্গি নাটকের ঘটনা ঘটায়। আসামি সৈয়দ নুরুল ইসলামের (ঢাকা রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি) বাড়ি শিবগঞ্জ এলাকায়, সেই কারণে তাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে আমার বাড়িতে জঙ্গি নাটকের ঘটনা সৃষ্টি করে আমার স্বামী আবুল কালাম আবুকে হত্যা করে। পরে আরও জানতে পারি যে, দুটি হেলিকপ্টার আমার বাড়ির সংলগ্নে ত্রীমোহনীতে নামে এবং আশপাশের লোকজনকে দূরে সরিয়ে দেয়। হেলিকপ্টার দুটির মধ্যে একটি থেকে তিনটি বস্তাবন্দি লাশ বের করে আমার বাড়ির মধ্যে নিয়ে যায়। অন্য হেলিকপ্টার থেকে উল্লেখিত আসামিদের মধ্যে ৩/৪ জন বের হয় এবং পূর্বেই ত্রীমোহনীতে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭/৮ জন বস্তাবন্দি তিনটি লাশ নিয়ে আমার বাড়ির ভেতরে রেখে বের হয়ে আসে। ২৭ এপ্রিল দুপুরের পর আমার বাড়ির মধ্যে বিকট শব্দ হয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়। পরবর্তীতে জঙ্গি নাটক সাজানোর জন্য বস্তাবন্দিযোগে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে এসে তাদের পেটের মধ্যে বোমা বেঁধে রেখে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। ওই সময় ভয়ে ও আতঙ্কে থাকায় মামলা করতে পারেননি বাদী।