গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় হাত-পা বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে গৃহবধূ জনতা বেগমকে (৩৪) হত্যা মামলায় পলাতক স্বামী-স্ত্রীসহ ৫ আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। ঘটনার পর থেকেই তারা ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় পালিয়ে ছিলেন। তবে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি নিহতের স্বামী আব্দুল লতিফ মিয়া (৪০) এখনও পলাতক রয়েছেন।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন- সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উত্তর শ্রীপুরের কছিমবাজার এলাকার মতলব মিয়ার ছেলে সাত্তার আলী (৩৫), আক্তারুল মিয়া (৩২) ও তার স্ত্রী মনি বেগম (৩০), একই গ্রামের মৃত হেলাল উদ্দিনের ছেলে মতলব আলী (৬৫) ও তার স্ত্রী লতিফুল বেগম (৫৬)।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকালে র্যাব-১৩ গাইবান্ধা ক্যাম্পের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৩, সদর কোম্পানি রংপুর ও র্যাব-৪ সিপিসি-২, সাভার ক্যাম্পের একটি যৌথ দল অভিযান পরিচালনা করে ঢাকার আশুলিয়া থানার নিশ্চিতপুর এলাকা থেকে স্বামী-স্ত্রীসহ ৫ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য আসামিদের সুন্দরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ১১ বছর আগে মামলার ১ নম্বর আসামি আব্দুল লতিফ মিয়ার সঙ্গে গৃহবধূ জনতা বেগমের বিয়ে হয়। তবে বিয়ের পর থেকেই আব্দুল লতিফ ও তার পরিবার জনতা বেগমকে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল। একপর্যায়ে গত ১০ জুন (মঙ্গলবার) সকাল ৯টার দিকে স্বামী লতিফ মিয়া ওই গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে মারধরের পর ধারালো দা দিয়ে তার গলায় আঘাত করে। পরে গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক জনতা বেগমকে মৃত ঘোষণা করলে তার মরদেহ কছিম বাজার এলাকায় কাঠের ব্রিজের উত্তরে ফেলে রেখে স্বামী লতিফ মিয়াসহ সবাই পালিয়ে যান।
এদিকে, এ ঘটনার পরদিন গত ১১ জুন নিহতের বোন বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় ১১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকেই আসামিরা আত্মগোপনে ছিলেন।
এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ জানান, গ্রেফতার ৫ আসামিকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং শুক্রবার (৪ জুলাই) সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি আব্দুল লতিফ মিয়াকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।