ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে সোহরাব হোসাইন আবির নামে এক ছাত্রদল নেতা নিহত হয়েছেন। শনিবার (৫ জুলাই) বিকালে উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহরাব হোসাইন আবির চাতলপাড় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক। তিনি কাঁঠালকান্দি গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, চাতল পাড় ইউনিয়নের উল্টা গোষ্ঠী ও মোল্লা গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরই অংশ হিসেবে শনিবার বিকালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষই দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে জড়িয়ে পড়ে। ঘণ্টাখানেক ধরে চলে এই সংঘর্ষ। এতে মোল্লা গোষ্ঠীর ছাত্রদল নেতা সোহরাব হোসাইন আবির নিহত হন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। আহতদের অনেকেই নাসিরনগর ও কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সংঘর্ষের পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গুরুতর আহতদের মধ্যে তিন জন মোল্লা গোষ্ঠীর। তারা হলেন- নেয়ামুল মিয়া, বাবুল মিয়া ও সুরাফ মিয়া। তাদের কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও আরও যারা আহত হয়েছে তারা হলেন- মোতাহার মিয়া, তালেব মিয়া ও আশিক মিয়া।
অন্যদিকে উল্টা গোষ্ঠীর আহতরা হলেন- আলাউদ্দিন, ইউসুফ মিয়া, হাফিজ মিয়া, সিরাজুল ইসলাম, দুরস মিয়া ও জলির মিয়া।
ঘটনা সম্পর্কে চাতলপাড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম জানান, দুই গোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ মারামারি শুরু হয়। একজন নিহত হয়েছে। লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। বন্ধ রয়েছে পুরো বাজার। মৃত্যুর ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর চাতলপাড় বাজারের প্রায় ৫ শতাধিক দোকানঘর বন্ধ হয়ে গেছে।
ঘটনা সম্পর্কে উল্টা গোষ্ঠীর আলাউদ্দিন বলেন, আমাদের লোকদের সবসময় তারা মারধর করতো। এর জেরে আজ এ ঘটনা ঘটে। বাজারে আমাদের ২০টি দোকান লুটপাট করে কয়েক কোটি টাকার মালামাল নিয়ে গেছে।
অপরদিকে মোল্লা গোষ্ঠীর পক্ষের মোতাহার হোসেন বলেন, আমাদের ওপর মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে অতর্কিত হামলা করে আলাউদ্দিনের লোকজন। এর মধ্যে সোহরাবকে টেঁটা দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলে। আরও দুই জন মৃত্যু পথযাত্রী। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।
নাসিরনগর থানা ওসি আজহারুল ইসলাম জানান, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শানিহা নাসরিন বলেন, সংঘর্ষে একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। লুটপাটের ঘটনা শুনেছি। আমি সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে কথা বলেছি।