বিপদসীমার ওপরে মুহুরী নদীর পানি, পাঁচ স্থানে বাঁধে ভাঙন

ফেনীর মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে গেলে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার পাঁচটি পয়েন্টে নদী রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দেয়।

বিশেষ করে ফুলগাজীর জঙ্গলঘোনা এলাকায় দুটি পয়েন্ট, গদানগর, দেড়পাড়া ও সাহেবনগর এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আশপাশের বসতঘর, কৃষিজমি ও কাঁচা রাস্তা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। অনেক পরিবার রাতের আঁধারে ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়।

একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘রাতে হঠাৎ পানি বাড়ে। বাঁধ ভেঙে গেলে ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে পড়ে। গরু-বাছুর নিয়ে কোনোমতে পার হইছি।’

জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করা হচ্ছে এবং সহায়তা দেওয়া হবে।’

এ ছাড়া ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘বাঁধের দুর্বল অংশগুলো চিহ্নিত করে তাৎক্ষণিকভাবে জিও ব্যাগ ও বালুভর্তি বস্তা ফেলা হচ্ছে। নদীর পানি এখনও বাড়ছে, তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর বর্ষা এলেই মুহুরী নদীর একই পয়েন্টগুলোতে বারবার ভাঙন দেখা দেয়। সাময়িক মেরামত বা বালুর বস্তা ফেলার মাধ্যমে শুধু ক্ষতি কিছুটা ঠেকানো হয় কিন্তু স্থায়ী বাঁধ, উন্নত নকশা ও দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরোধব্যবস্থা না থাকায় সমস্যা থেকে যায়।

তাদের দাবি, বারবার ভাঙন আর আতঙ্ক নয়—দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তারা বলেন, ‘এই নদী শুধু আমাদের জীবিকা নয়, বাঁচার পথ।’