নারায়ণগঞ্জে ক্ষমতাসীনদের সড়ক অবরোধ, সুশীলদের শহরে ঢুকতে না দেওয়ার হুমকি

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগরে একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগের ইস্যুকে সামনে রেখে শহরের চাষাঢ়ায় প্রায় আধাঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন। তবে ওই সময়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে নিয়ে জোরালো কোনও বক্তব্য না দিলেও বন্দরের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে ইসলাম ও আল্লাহকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ এনে শাস্তির দাবিতে তারা বক্তব্য রাখেন।

শনিবার বিকাল ৪টা ২০ মিনিট থেকে ৫টা পর্যন্ত চাষাঢ়া এলাকায় বিভিন্ন পরিবহনের বাস এলোপাতাড়ি করে রেখে এ অবরোধের সৃষ্টি করা হয়। এতে করে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড ও ঢাকা-পাগলা-নারায়ণগঞ্জ রুটে যান চলাচল বন্ধ থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উৎসব পরিবহনের এক বাসচালক বলেন, ‘হঠাৎ আমাদের বাস থামিয়ে দেয় ২০-২৫ জন যুবক। বুঝেনইতো তারা কারা। পরে আমাদের বাস রাস্তার মধ্যে ব্লক দিতে বলে, আমরাও তাই দেই।’

এদিকে, অবরোধের সময়েই চাষাঢ়ায় শহীদ মিনার এলাকায় ‘নারায়ণগঞ্জের সচেতন যুব সমাজ’ এর ব্যানারে শ্যামল কান্তি ভক্তের শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়। সেখানে মূলত ক্ষমতাসীন দলের লোকজনরাই উপস্থিত ছিলেন।

তবে শ্যামল কান্তি ভক্ত ইস্যুতে ওই অবরোধ করা হয়নি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম বলেন, ‘শনিবার দুপুরে গোগনগরে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ (প্রকৃতপক্ষে শ্লীলতাহানির চেষ্টা) সংক্রান্ত ইস্যুতে জড়িত শিক্ষকের শাস্তি দাবিতে বিক্ষুব্ধ জনতা অবরোধ করেছিল। পরে পুলিশ এসে সে অবরোধ তুলে দেয়। আর আমরা সচেতন যুব সমাজ বন্দরে শিক্ষকের ঘটনায় আল্লাহকে কটূক্তি করার প্রতিবাদ জানিয়েছি।’

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আবদুল মালেকও জানান, গোগনগরে ঘটনায় শিক্ষকের বিচার চেয়ে কিছু লোকজন সড়ক অবরোধ করেছিল। পরে সেটা তুলে নেওয়া হয়। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, যারা সচেতন যুব সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন করে তারাই মূলত ওই অবরোধ করে।

 সুশীলদের নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না

এদিকে, মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে আর ভবিষ্যতে এমন কোনও সুশীল ব্যক্তিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না যে বা যারা এখানে এসে ১০-১২ জনকে নিয়ে সমাবেশ করে ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারকে নিয়ে কটূক্তি ও মিথ্যাচার করবে। বন্দরের পিয়ার সাত্তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করায় সারাদেশের মানুষ ক্ষোভে ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে। আর সেটা চাপা দিতেই ঘটনা ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার প্রয়াসে নেমেছেন কিছু সুশীল ও বাম ঘরনার নেতাকর্মীরা। ঢাকা থেকে কামাল লোহানীর মত লোকজন এসে ১০-১২ জনকে নিয়ে উল্টাপাল্টা বক্তব্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।

সচেতন যুব সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবলীগের সেক্রেটারি আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নাজমুল আলম সজল, সেক্রেটারি জুয়েল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, বর্তমান সেক্রেটারি মিজানুর রহমান সুজন, সহ সভাপতি মিনহাজুল ইসলাম রিয়াদ, মহানগরের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান রিয়াদ প্রমুখ।

 আরও পড়ুন:

সেলিম ওসমানের ব্যাপারে কঠোর মনোভাব সরকারের

/বিটি/টিএন/