বারোমাসি পেয়ারা চাষে লাখপতি সামাউল

গোপালগঞ্জে বারোমাসি পেয়ারা চাষে লাভবান মো. সামাউল ইসলামগোপালগঞ্জে বারোমাসি পেয়ারা চাষ করে লাখপতি হয়েছেন মো. সামাউল ইসলাম। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ‘বারি পেয়ারা-২’ আবাদ করে প্রথম বছরেই ২ লাখ টাকা লাভ করেছেন তিনি।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সরেজমিন গবেষণা বিভাগের পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পেন সহায়তায় মুকসুদপুর উপজেলার কদমপুর গ্রামের ৭ একর জমিতে এ পেয়ারা বাগান গড়ে তুলেছেন সামাউল। বাগান করতে তার ব্যয় হয়েছে ২ লাখ টাকা। প্রথম বছরেই তিনি বিক্রি করেছেন ৪ লাখ টাকার পেয়ারা। তার লাভ হয়েছে ২ লাখ টাকা। প্রতিদিনই এ বাগান থেকে তিনি পেয়ারা বাজারজাত করছেন। লাভজনক পেয়রা চাষ পরিদর্শনে তার বাগানে প্রতিদিনই কৃষকরা আসছেন। তারাও পেয়ারা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
গোপালগঞ্জ, মুকসুদপুর, কাশিয়ানী টেকেরহাট, ফরিদপুরে আলফাডাঙ্গা, নগরকান্দার পাইকাররা তার বাগান থেকে পেয়ারা কিনে নিয়ে বাজরে বিক্রি করছেন।

পেয়ারা চাষি মো. সামাউল ইসলাম বলেন, কদমপুরের এ জমিতে কাশবন জন্মে অনাবাদি থাকতো। আমি মালিকের কাছ থেকে ৭ একর জমি লিজ নিয়ে পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পেন সহায়তায় ২ লাখ টাকা খরচ করে ২০১৫ সালের জুনে পেয়ারা বাগান গড়ে তুলি। এ বছর জুলাই-আগস্ট মাসে এ বাগান থেকে ৪ লাখ টাকা পেয়েরা বিক্রি করেছি। প্রথম বছরেই ২ লাখ টাকা লাভ হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিনই বাগান থেকে পেয়ারা বিক্রি করছি। আগামী সাড়ে ৪ বছর এ বাগান থাকবে। পেয়ারা উৎপাদনে এখন খরচ কমে এসেছে। সামনে লাভ আরও বেশি হবে বলে আশা করছি।’ মুকসুদপুরে এ ধরনের জমি পড়ে রয়েছে। চাষিরা সেখান থেকে পেয়ারার আবাদ সম্প্রসারিত করলে তারা আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারবে।

মুকসুদপুর উপজেলার কদমপুর গ্রামের কৃষক ওবায়দুর রহমান বলেন, সামাউল এলাকায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার পেয়ারা বাগান দেখে লাভজনক পেয়ারা চাষে কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। সারা বছর বাজারে এ পেয়ারার দাম ভালো থাকছে।

গোপালগঞ্জের পেয়ারা বিক্রেতা কামরুল ইসলাম বলেন, সামউলের করা চাষের পেয়ারাগুলো খেতে সুস্বাদু, দেখতেও সুন্দর। তাই ক্রেতারা এ পেয়ারা বেশি দাম দিয়ে কিনে নিয়ে যায়।

পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এইচ.এম খায়রুল বসার বলেন, ‘সামাউল এ পেয়ারা চাষ করে প্রথম বছরেই লাভবান হয়েছেন। বাগানে সারা বছরই এ পেয়ারা উৎপাদিত হয়। এতে তার প্রতিদিনই আয়ের সুযোগ থাকে। সামউলের পেয়রা বাগান দেখে অনেকেই পেয়ারা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আমরা আমাদের প্রকল্প থেকে আগ্রহী কৃষকদেরও সহায়তা করবো।’

/এআর/