কোটালীপাড়া উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা

গোপালগঞ্জগোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পূর্ব উত্তর কোটালীপাড়া দারুচ্ছুন্নাত ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন খানের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে গোপালগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলাটি করেন।
হুময়ূন কবির বাদীর স্বামীর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শংকর কুমার বিশ্বাস মামলাটি গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদেন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত এ মামলার আগামী শুনানির তারিখ আগামী ১৬ মার্চ নির্ধারণ করেছেন।

মামলার বাদী ফাতেমা বেগম বলেন, হুমায়ুন কবীর বিএ পাশের জাল সনদ দিয়ে পূর্ব উত্তর কোটালীপাড়া দারুচ্ছুন্নাত ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি হয়েছে। তিনি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, মাদ্রাসার টাকা আত্মসাৎসহ অনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে চাপ দিতে থাকেন। অধ্যক্ষ এতে রাজি না হওয়ায় হুমায়ুন কবির তাকে ওই পদ থেকে অপসারণের চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় আমার স্বামী বাদী হয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে কোটালীপাড়া সহকারী জজ আদালতে সনদ জালিয়াতির একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর হুমায়ূন কবির ক্ষিপ্ত হয়ে আমার স্বামীকে চাকরিচ্যুত করা নেটিশ দেয়। এ ছাড়া চাকরি বাঁচাতে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে আমাদের খুন ও লাশ গুমের হুমকি দেয়।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, হুমায়ূন কবীর শিক্ষাবিদ নয়। তিনি উচ্চ শিক্ষিতও নন। শিক্ষানুরাগী ক্যাটাগরিতে এ কারণে তিনি সদস্য হতে পারেন না। তিনি এডওয়ার্ড ইউনিভারসিটি থেকে বিএ পাশ করেছেন মর্মে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্র দাখিল করেছেন। সনদে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা এবং পাশের তারিখ যথাযথভাবে পরিলক্ষিত নয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোথাও স্বীকৃতি নেই। উচ্চ শিক্ষিত না হয়েও তিনি বিধি বিধান লঙ্ঘন করে এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন পেযেছেন।

তিনি আরও বলেন, ওই জাল সনদপত্র দিয়ে তিনি কোটালীপাড়া উপজেলার ভাঙ্গারহাট কাজী মন্টু কলেজ, হিজলবাড়ী শেখ রাসেল কলেজ, গচাপাড়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার বিদ্যোৎসাহী সদস্য, কোটালীপাড়া পাবলিক ইনস্টিটিউশন ও পূর্ব উত্তর কোটালীপাড়া দারুচ্ছুন্নাত ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবীর চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, দারুচ্ছুন্নাত ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন খান মাদ্রিাসায় অর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে। এ কারণে তাকে শোকজ করা হয়েছে। তিনি শোকজের ভালো জবাব দিতে পারেননি। নিজের অর্থিক দুর্নীতি ঢাকতেই তিনি আমার বিরুদ্ধে প্রথম মিথ্যা সনদ জালিয়াতির মামলা করেন। আমি কোনও সনদ জালিয়াতি করিনি। এ মামলার প্রতিবাদে গত ৪ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতিবাজ ওই অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মাদ্রসা ক্যাম্পাসে মিছিল সমাবেশ করে। এলাকাবাসীও মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষক তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছে। আমরা বিধি অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে সময়িক বরখাস্ত করেছি। অবস্থা বেগতিক দেখে এখন স্ত্রীকে দিয়ে হয়রানি মূলক চাঁদাবাজির মামলা করেছেন।

/এআর/