বাবা-মেয়ের আত্মহত্যার জন্য নষ্ট রাজনীতি দায়ী: সৈয়দ আবুল মকসুদ

 

গাজীপুরে ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যাকারী হযরত আলীর স্বজনের সঙ্গে কথা বলছেন সৈয়দ আবুল মকসুদগাজীপুরের শ্রীপুরে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে বাবা-মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ। তিনি  বলেন, ‘এ রকম ঘটনা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় অহরহ ঘটছে। দুর্বলেরা রাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনও সহায়তা পাচ্ছেন না।  আমাদের রাজনৈতিক অবস্থাটা স্বাভাবিক নেই, সুস্থ নেই, এতে গণতন্ত্র নেই, বর্তমানের রাজনীতি নষ্ট রাজনীতি। বাবা-মেয়ের আত্মহত্যার জন্য এই নষ্টরাজনীতি দায়ী।’  বুধবার দুপুরে গাজীপুরের কর্ণপুর সিটপাড়া গ্রামে নিহত হযরত আলীর স্বজনদের খোঁজ নেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘এ ঘটনা বাংলাদেশের কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি অনেক ঘটনার মধ্যে একই রকম একটি ঘটনা। এর সবকিছু আমরা জানতে পারছি না। চক্ষুলজ্জা বা দুর্বলতার কারেণই সেগুলো বাইরে জানাজানি হয় না।’

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের জমি-জমা সংক্রান্ত ঘটনা বা বিরোধ স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা সালিশের মাধ্যমে মিটিয়ে দিতে পারতেন। তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন না। দুর্বলের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের প্রশাসন রয়েছে, পুলিশ প্রশাসন রয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, তারাও ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে না। অনেক সময় মামলাও নেয় না। যদি স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধি ও প্রশাসনের লোকজন ঠিকমতো কাজ করতেন, তাহলে এ ঘটনা এখানে ঘটতো না।’

নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে না উল্লেখ করে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘তারা কাজ না করলে সমাজে দুর্বলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। এ কারণেই দু’টি মানুষ জীবন দিয়ে প্রতিবাদ করে গেছেন। এটি বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে বিরাট প্রতিবাদ। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সবাইকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা তাদের পাশে থাকব।’

এ সময়  আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি ) কেন্দ্রীয় সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ২৯ এপ্রিল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শ্রীপুর রেলস্টেশনের পশুহাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় চলন্ত তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে মেয়ে আয়েশা আক্তারসহ বাবা হযরত আলী আত্মহত্যা করেন। মেয়ের শ্লীলতাহানি ও গরু চুরির  বিচার না পাওয়ায় তারা আত্মহত্যা করেন।  

/এমএনএইচ/