জীর্ণদশা কেরানীগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রি অফিসের, নষ্ট হচ্ছে দলিলপত্র

 

জীর্ণ দশা কেরানীগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রি অফিসেরসংস্কারের অভাবে ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানা সাবরেজিস্ট্রি অফিসটি এখন জরাজীর্ণ। অফিসে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় গাদাগাদি করে যেখানে সেখানে ফেলে রাখা হয়েছে জমির মূল্যবান দলিলপত্র। ফলে এগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৫ বছর আগে দুই কামরার ছোট একটি ভবনে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম শুরু হয়। একটি কামরায় নকল নবিসের কার্যক্রম চলে। অপর কামরায় সাবরেজিস্ট্রার অফিস করেন। ওই কামরাতেই অন্য কর্মচারীরা ঠাসাঠাসি করে বসেন। এই অফিসে রেজিস্ট্রি করা জমির দলিলপত্র আলাদাভাবে রাখার কোনও ব্যবস্থা নেই। ফলে ২০০৭ সাল থেকে অদ্যাবধি যত্রতত্র গাদাগাদি করে ফেলে রাখা হয়েছে হাজার হাজার দলিলপত্র। সাবরেজিস্ট্রারের অবসর সময়ে বসার ছোট খাস কামরার ভেতরেও গাদাগাদি করে রাখা শত শত  জমির দলিল। ফলে অযত্ন, অবহেলায় অনেক জমির দলিল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক দলিলপত্র ইঁদুর, তেলাপোকাতেও খাচ্ছে। বৃষ্টির সময়ও অফিসে পানি পড়ে মূল্যবান দলিলপত্র নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া দলিলপত্র অফিসে যত্রতত্র ফেলে রাখায় তা খোয়াও যেতে পারে। এছাড়া রেজিস্ট্রি করা মানুষের জমির মূল দলিল ফেরত দেওয়ার কার্যক্রমও খুব ধীরগতির বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। ফলে অফিসে দলিলপত্রের পাহাড় জমে গেছে।

গাদাগাদি করে রাখা দলিলপত্রনাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২০০৮ সালে জমি রেজিস্ট্রি করেছি। অথচ সেই জমির মূল দলিল আজও  হাতে পাইনি।’  দলিল লেখক শহিদুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, ‘কেরানীগঞ্জের জমির দাম অনেক বেশি। অফিসে যেভাবে জমির দলিলপত্র ফেলে রাখা হয়েছে তাতে অনেক দলিল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার নিরাপত্তার অভাবে অনেক দলিল অফিস থেকে খোয়াও যেতে পারে।’

দলিল লেখক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘দলিলপত্র যত্রতত্র ফেলে রাখায় অনেক দলিল ইঁদুর, তেলাপোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এসব দলিলপত্র নষ্ট হয়ে গেলে মানুষের মাথায় হাত পড়বে।’

মেঝেতেও রাখা দলিলপত্রকেরানীগঞ্জ মডেল থানা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘স্বল্প জায়গায় মানুষের হাজার হাজার দলিলপত্র যত্রতত্র ফেলে রাখায় এগুলো নষ্ট হয়ে গেলে এর দায় কে নেবে? আমরা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগাদা দিয়েছি।’

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার সাবরেজিস্ট্রার শফিউল বারী বলেন, ‘আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করছি খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।’