এভারেস্ট দেখা হলো না তাদের

নেপালে নিহত ফারুক, তার স্ত্রী অ্যানি ও মেয়ে তামাররা‘মাস খানেক আগে ভারত ঘুরে এসেছিল ফারুক। এবার সপরিবারে নেপাল গিয়েছিল সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট দেখতে। নেপাল যাওয়ার একদিন আগে রবিবার তারা আমাদের বাড়িতে এসে দেখা করে দোয়া চেয়ে বিদায় নিয়েছিল।’ নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ফারুক আহমেদ প্রিয়কের শ্বশুর সালাউদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে এসব কথা বলেন। ফারুকের সঙ্গে তার একমাত্র সন্তান তামাররাও (৩) মারা গেছে। 

নেপালে বিধ্বস্ত ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বিমানের যাত্রীদের মধ্যে গাজীপুরের নগরহাওলা গ্রামের একই পরিবারের পাঁচ সদস্য ছিলেন। ফারুক আহমেদ প্রিয়ক (৩২), তার স্ত্রী আলমুন নাহার অ্যানি (২৫), তাদের একমাত্র সন্তান তামাররা প্রিয়ক (৩), নগরহাওলা গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান মাসুম (৩৩) ও তার স্ত্রী সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা আক্তার (২৫) ছিলেন বিমানটিতে। ফারুক ও মেহেদী হাসান সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো ভাই। ফারুক পেশায় একজন ফটোগ্রাফার। আর মেহেদী হাসান পেশায় ব্যবসায়ী। মেহেদি ও তার স্ত্রী বেঁচে আছেন এবং কাঠমান্ডুতে চিকিৎসাধীন। কাঠমান্ডুতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্বর্ণা ও অ্যানি

দুর্ঘটনার শিকার ফারুক গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগরহাওলা গ্রামের মৃত শরাফত আলীর ছেলে। তার শ্বশুর সালাউদ্দিনের বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কাজীর শিমলা এলাকায়। তিনি জানান, ২০১১ সালে ফারুক তার বড় মেয়ে অ্যানিকে বিয়ে করে। তার একমাত্র ছেলে মেহেরাব হোসেন অপি (১৭) গত বছর অসুস্থ অবস্থায় মারা যায়। ছোট মেয়ে বাড়ির পাশে কাজীর শিমলা নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ছে। বড় মেয়ে অ্যানিও এবার তার স্বামী-সন্তান হারিয়ে একা হয়ে গেল।

সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা এখনও আমাদের মেয়েকে তার স্বামী-সন্তানের মৃত্যুর খবর জানাইনি। সে নেপালের হাসপাতালে এখনও শুয়ে তার স্বামী-সন্তানের খোঁজ করছে।’ 

উল্লেখ্য, সোমবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা ২০ মিনিটে নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান। ৭৮ জন ধারণে সক্ষম কানাডার তৈরি ড্যাশ-৮-কিউ৪০০ উড়োজাহাজটিতে চারজন ক্রু ও ৬৭ যাত্রী মিলে ৭১ আরোহী ছিলেন। এর মধ্যে ৩৭ জন পুরুষ, ২৮ জন নারী ও দুইজন শিশু। এই যাত্রীদের মধ্যে ৩২ জন বাংলাদেশি, ৩৩ জন নেপালি, একজন চীনা ও একজন মালদ্বীপের নাগরিক। এছাড়া উড়োজাহাজটিতে চারজন ক্রু ছিলেন। ক্রুরা সবাই বাংলাদেশি। ৩৬ বাংলাদেশির মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। ১০ জন আহত অবস্থায় কাঠমান্ডুতে চিকিৎসাধীন আছেন।