‘ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারবেন’

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনগাজীপুরে প্রতিটি এলাকা থেকে নির্বিঘ্নে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে পারবেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব। র‌্যাবের-১ এর কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাসেম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘এত বড় একটি মহানগর এরিয়ার ভোটকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য র‌্যাবকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। র‌্যাবকে তিনটি স্তরে সাজানো হয়েছে। নির্বাচন পূর্ববর্তী, নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচন পরবর্তী— মহানগরের ভোট কেন্দ্রগুলোকে প্রধান দুইটি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে।’

কর্নেল সারওয়ার বিন কাসেম জানান, গাজীপুর সদর সেক্টরকে তিনটি সাব সেক্টর এবং টঙ্গী সেক্টরকে তিনটি সাব সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। গাজীপুর সদরের সাব সেক্টরগুলো হলো -গাজীপুর, জয়দেবপুর ও কাশিমপুর। টঙ্গী সেক্টরের সাব সেক্টরগুলো হলো- পুবাইল, টঙ্গী ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

কর্নেল সারওয়ার বিন কাসেম আরও জানান, প্রতিটি সাব সেক্টরের ওয়ার্ডসমূহে দুইটি করে পেট্রল টিম দেওয়া হয়েছে। র‌্যাবের ৫৮টি টিম অলরেডি কাজ করছে। প্রতিটি সাব সেক্টরে একজন করে কর্মকর্তা থাকবেন। তারা ইতোমধ্যে কেন্দ্রগুলো রেডি করেছেন। তারা নির্বাচনের দিনও থাকবেন, যেন আইনশৃঙ্খলার কোনও বিঘ্ন না ঘটে।

আর পড়ুন: গাজীপুরে ছয় কেন্দ্রে ইভিএম, তিন কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তৃতীয় স্তরে থাকবে নির্বাচন পরবর্তী কাজও। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর ব্যালট বাক্সগুলো সুষ্ঠুভাবে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করবে র‌্যাব। প্রচুর সংখ্যক বেসামরিক লোকজনও সিটি এলাকায় মোতায়েন রয়েছে। তারা কাজ করছে। আমরা যথাসময়ে সব খবর পাচ্ছি। যদি কোথাও কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে তাহলে আমরা আশা করছি— অতি দ্রুত আমাদের দুইটি স্ট্রাইকিং ফোর্সের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো। আমরা ইনশাল্লাহ, যেকোনো ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছি।’

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন মন্ডল জানান, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মালামাল সিটির বঙ্গতাজ অডিটোরিয়াম, ডুয়েট, কোনাবাড়ি ডিগ্রি কলেজ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং টঙ্গী সরকারি কলেজসহ মোট পাঁচটি ভেন্যু থেকে সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিশ ফোর্স কেন্দ্রভিত্তিক মালামাল নিয়ে গেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে রিটার্নিং অফিসার বলেন, ‘নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি অত্যন্ত ভালো। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১২-১৩ হাজার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী  ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে ৫৭ ওয়ার্ডে ৫৭ জন নিজস্ব পর্যবেক্ষক দিয়েছে। আমি মনে করি নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হবে। যারা ভোটার আছে তাদের উদ্দেশে আমরা বলেছি— তারা নিরাপদে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যাবে এবং ভোট গ্রহণ শেষে তারা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবে।’

আরও পড়ুন: নিরাপত্তার চাদরে গাজীপুর (ফটো স্টোরি)

গাজীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ, এপিবিএন, আনসারসহ পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। ৬২জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন থাকবে এবং তিন জন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবেন।

৫৭টি সাধারণ এবং ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সিটি করপোরেশনের মোট ভোটার ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৯৩৫ জন এবং নারী ভোটার ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন।