কারাগারগুলোকে এখন সংশোধনাগারে পরিণত করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বন্দিদের সকালের নাস্তার মেন্যু পরিবর্তন উদ্বোধনের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বক্তব্য রাখছেন 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন,‘দেশের কারাগারগুলোকে এখন সংশোধনাগারে পরিণত করা হয়েছে। তাই বন্দিদের নানা ধরনের প্রশক্ষিণ দেওয়া হচ্ছে। যে যেই কাজ পারে তাকে সেই কাজের ওপর প্রশক্ষিণ দেওয়া হচ্ছে। কারাগারে বন্দিদের প্রায় ৩৮টি কাজের ওপর প্রশক্ষিণ দেওয়া হচ্ছে। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া পর তারা যাতে কিছু করে জীবিকা নির্বাহ করতে ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে। তাই এসব প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি রবিবার (১৬ জুন) সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দিদের সকালের নাস্তার মেন্যুর পরিবর্তন উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী আরও বলেন,‘ব্রিটিশ শাসন আমলে আমাদের এ অঞ্চলে কারাগার ব্যবস্থা চালু হয়। দীর্ঘদিন ধরে সকালের খাবারে মেন্যু হিসেবে সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য বরাদ্ধ ছিল ১১৬.৬৪ গ্রাম আটার রুটি ও ১৪.৫৮ গ্রাম আখের গুড়। আর বিচারাধীন বন্দিদের জন্য ৮৭.৪৮ গ্রাম আটার রুটি ও ১৪.৫৮ গ্রাম আখের গুড় বরাদ্দ ছিল। যা বন্দিদের জন্য অপ্রতুল ছিল। বন্দিদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির কথা বিবেচনা করে বর্তমান সরকার তাদের জন্য সকালের নাস্তার খাবারে মেন্যুর পরিবর্তন করেছেন।’

তিনি আরও বলেন,‘বর্তমানে বন্দিদের স্বাস্থ্যসম্মত ও সুষম খাবারের কথা চিন্তা করে সকালের নাস্তায় সপ্তাহে ৪দিন রুটি-সবজি, ১ দিন হালুয়া-রুটি ও  ২ দিন সবজি-খিচুরি দেওয়া হবে। এই খাবার আজ থেকে সারাদেশের কারাগারগুলোতে দেওয়া হবে। ’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,‘কারাগারগুলোতে এখন রেডক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। কারাগারে খাদ্যের মান কিভাবে আরও  উন্নত করা যায় এবং কারাগারের পরিবেশ কিভাবে আরও  উন্নত করা যায় সে বিষয়ে তারা আমাদের পরামর্শ দিচ্ছে। আমরাও সে বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন,‘আমরা বন্দিদের মানসিক অবস্থা ভালো রাখার ব্যবস্থা করছি। বন্দিরা যাতে তাদের আপন জনদের সঙ্গে কথা বলতে পারে সেজন্য  প্রিজন লিংক অর্থাৎ ‘স্বজন’ নামে একটি মোবাইল সেবা চালু করেছি। এই সেবাটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে হাতে নেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন,‘বর্তমানে সারাদেশের কারাগারগুলোতে বন্দির সংখ্যা  ৮১,১৮৩ জন। আগে যা ছিল ৯০,০০০ জন। আমরা কারাগারগুলোর বন্দির সংখ্যা আরও  কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’ খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন,‘এটা একটি বিচারাধীন বিষয়। তিনি কোথায় থাকবেন সেটা আদালতই নির্ধারণ করবেন। যার যেখানে থাকা প্রয়োজন জেলকোড অনুযায়ী সে সেখানে থাকবেন। আমাদের এবিষয়ে কোনও হাত নেই।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন,‘স্বরাষ্ট্র সচিব শহিদুল ইসলাম, আইজি প্রিজন মোস্তফা কামাল পাশা, অতিরিক্ত আইজি প্রিজন আবরার হোসেন, ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু ছালে মোহাম্মদ ফেরদৌস খান, ডিআইজি প্রিজন টিপু সুলতান, কেরানীগঞ্জ   সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রামানন্দ সরকার, কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেলসুপার ইকবাল হোসেন চৌধুরী,দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহজামান ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানার  ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের প্রমুখ।