নিখোঁজ রাইচরণ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ভৈরবনগর গ্রামের বিশ্বনাথ বিশ্বাসের ছেলে। তার স্ত্রী মমতা হালদার টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি করেন। তাদের ১২ বছরের এক সন্তান রয়েছে।
জানা গেছে, রাইচরণ বিশ্বাস গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর মোটরসাইকেলে মুকসুদপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ফুলারপাড় এলাকায় সাপ্তাহিক কিস্তি আদায়ের জন্য সকাল ৮টার দিকে অফিস থেকে বের হন। এর পর থেকে তাকে আর পাওয়া যায়নি। এ সময় তার সঙ্গে মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল ও অফিসের কাগজপত্র ছিল।
নিখোঁজের সাড়ে ছয় মাসের মাথায় গত ৮ জুলাই (সোমবার) দুপুরে মুকসুদপুর উপজেলার ডাঙ্গাদুর্গাপুর গ্রামের একটি পুকুরে জেলেদের জালে আটকে পড়ে একটি মোটরসাইকেল। খবর পেয়ে রাতেই মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে সিআইডি। মোটরসইকেলটি রাইচরণের বলে ‘আশা’র ব্রাঞ্চ-২ এর ম্যানেজার বাবুল আক্তার নিশ্চিত করেন। পরে ১০ জুলাই (বুধবার) রাইচরণের সন্ধানে পুকুর ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়।
মামলার বাদী ও নিখোঁজ রাইচরণের শাশুড়ি শেফালী সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘জামাই নিখোঁজের সংবাদে আমি মুকসুদপুরের গোবিন্দপুর এলাকায় গিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলি। এলাকাবাসী আমাকে জানান, বক্কার চৌকিদারের বাড়িতে কিস্তি আদায় করতে গিয়ে চৌকিদারের মেয়ে বা ভাইঝিকে মোটরসাইকেলে করে বাজারে নিয়ে যায় সে। আমি ওই বাড়ির কিস্তি পরিশোধের পাশবই দেখতে চাইলে, আমাকে দুটি ছেড়া পাশবই দেখানো হয়, যা দেখে আমার সন্দেহ হয়। ওই গ্রামের পুকুর থেকে মোটরসাইকেল ও ধানক্ষেত থেকে জামাইয়ের গায়ের জামা উদ্ধার হওয়ায় আমাদের সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়েছে। আমরা চাই প্রকৃত রহস্য পুলিশ উদঘাটন করুক। আসামিরা ধরা পড়ুক, বিচার হোক।’
এলাকাবাসী দেলোয়ার তালুকদার, লিটন শেখ, কামাল দফাদার জানান, রাইচরণ বিশ্বাস কিস্তি আদায় করতে এসে দিনে দুপুরে নিখোঁজ হন। এলাকার চিহ্নিত কিছু সন্ত্রাসী এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলে তাদের ধারণা। তারাও এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনের দাবি জানান।
আশা ব্রাঞ্চ-২ এর ম্যানেজার বাবুল আক্তার জানান, রাইচরণ বিশ্বাস নিখোঁজের ঘটনায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে না পেয়ে ওই দিন রাতে মুকসুদপুর থানায় সাধারণ ডায়রি করি এবং ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানায়।
সিআইডি’র ক্যাম্প ইনচার্জ পরিদর্শক এসএম ইফতেখারুল আলম এ ব্যাপারে বলেন, ‘বিষয়টি উদ্বেগজনক। আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি, ঘটনার রহস্য দ্রুতই উদঘাটন করতে পারবো।’