শনিবার (২৭ জুলাই) সকালে ঘোড়াশাল পৌর অডিটরিয়ামে পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের ৫৫০ জন ভাতা প্রাপ্তদের ব্যাংক হিসাব খোলার জন্য এনআরবিসি ব্যাংক নরসিংদীর শাখা কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা সমাজ সেবা অধিদফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে নানা হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে কার্ডধারী দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ অভিযোগ করেছেন।
তারা জানান, ব্যাংক হিসাব খোলার জন্য তাদের উপজেলা সমাজ সেবা অফিস থেকে জানানো হয়। এখানে আসার পর অ্যাকাউন্ট খুলতে বই জমা দিলে ব্যাংকের লোকজন বলেন, সমাজ সেবা অফিসের দেওয়া এমআইএস (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) নম্বর ভুল। তাই তাদের অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব হবে না।
ঘোড়াশাল পৌর এলাকার বিধবা কার্ডধারী নাছিমা বেগম বলেন, ‘দেড় বছর ধরে কোনও টাকা পাচ্ছি না। শনিবার অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে ব্যাংকের লোকজন আমার এমআইএস নম্বর ভুল বলছে।’
নেপাল চন্দ্র ধর, মেহেরুন বেগমসহ অনেক ভুক্তভোগীদের একই অভিযোগ।
ঘোড়াশাল পৌর এলাকার দক্ষিণ পলাশ গ্রামের ফজলুল হক বলেন, ‘উপজেলা সমাজ সেবা অফিস থেকে প্রায় তিন বছর আগে আমাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড দিলেও আমি কোনও টাকা পাইনি। শনিবার যখন অ্যাকাউন্ট খুলতে যাই, তখন ব্যাংকের লোকজন জানান আমার কার্ডে নাকি ভুল আছে। কী ভুল আছে খবর নিলে জানতে পারি, চরসিন্দুর ইউনিয়নের এক মৃত ব্যক্তির নামের সঙ্গে আমার নাম মিল থাকায় কোনও ভাতার টাকা পাচ্ছি না। এজন্য অ্যাকাউন্টও খুলতে পারবো না।’
ঘোড়াশাল পৌর কাউন্সিলর শহিদুল হক রোমেল জানান, ব্যাংক আর সমাজ সেবা অফিসের লোকজনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে ভাতাপ্রাপ্ত নারী-পুরুষ ব্যাপক হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন। তারা একে অপরকে দোষারোপ করছেন। এ কারণে অনেক ভুক্তভোগীরাই ভাতার টাকা তুলতে পারছেন না।
এ বিষয়ে ঘোড়াশাল পৌর মেয়র শরিফুল হক জানান, ‘আমার কাছেও অনেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন। উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের লোকজনের খামখেয়ালির কারণে ভাতাপ্রাপ্তরা নানা ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন।’
এনআরবিসি ব্যাংক নরসিংদী শাখার কর্মকর্তা হাসান মাহমুদ বলেন, ‘অধিকাংশ ভাতা প্রাপ্তদের এনআইসি নম্বর ভুল থাকার কারণে আমরা তাদের ব্যাংক হিসাব খুলতে পারছি না। উপজেলা সমাজ সেবা অফিস থেকে ভাতা প্রাপ্তদেরকে ভুল এমআইএস নম্বর দেওয়া হয়েছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’
পলাশ উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, ‘ভাতা প্রাপ্তদের এমআইএস নম্বরে কোনও ভুল নেই। আমরা সঠিকভাবে এনআইডি নম্বর দিয়ে এমআইএস নম্বর দিয়েছি।’