পরীক্ষায় প্রথম ও ৮ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েও চাকরি পাননি নূর ইসলাম!

সংবাদ সম্মেলন করছেন নূর ইসলামলিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন নূর ইসলাম। চাকরি নিশ্চিত করতে কয়েক দফায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা ঘুষও দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও চাকরি পাননি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

যশোরের রুপদিয়া ওয়েলফেয়ার অ্যাকাডেমির মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে পরীক্ষা দেন নূর ইসলাম। তার অভিযোগ,  ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও প্রধানশিক্ষক তার সঙ্গে প্রতারণা করে আরেকজনকে নিয়োগ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) যশোর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন। স্কুলের সভাপতি সোহরাব হোসেন ও প্রধানশিক্ষক বিএম জহিরুল পারভেজ টাকা লেনদেনের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন।

লিখিত বক্তব্যে নূর ইসলাম বলেন, রুপদিয়া ওয়েলফেয়ার একাডেমির মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগ সংক্রান্তে ২০১৫ সালের ৬ মার্চ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ওই পদে আমাকে নিয়োগ দেবেন বলে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও প্রধানশিক্ষক যথাক্রমে সোহরাব হোসেন ও বিএম জহিরুল পারভেজ নগদ ৭  লাখ টাকা নেন। কিন্তু তারা নিয়োগ বোর্ড গঠন করেননি। একই বছরের ১০ অক্টোবর দ্বিতীয়বার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও নিয়োগ বোর্ড করেননি। সবশেষ ২০১৬ সালের ২০ জুন তৃতীয়বারের মতো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বোর্ড গঠন করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে বোর্ড গঠন করা হয়। সেখানে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় তিনি প্রথম হলেও তাকে নিযোগ না দিয়ে গড়িমসি করেন সভাপতি ও প্রধানশিক্ষক। পরে রেজ্যুলেশন করতে আরও দেড় লাখ টাকা নেন তারা। কিন্তু আমাকে নিয়োগ না দিয়ে চিন্তা সেন নামে একজনকে ওই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, ‘নিয়োগ না পেয়ে আমি তাদের কাছে আমার পাওনা সাড়ে ৮ লাখ ফেরত চাইলে তারা গড়িমসি করেন। একপর্যায়ে ২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি এই ঘটনার সাক্ষী নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার নজরুল ইসলামের নামে তিন লাখ টাকার একটি চেক দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যাংকে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে বলা হয়, অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা নেই।’

তিনি আরও বলেন, জমিজমা বিক্রি করে একটি স্থায়ী চাকরির আশায় সাড়ে ৮ লাখ দিয়েছিলাম। কিন্তু চাকরি তো হয়নি এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না।

এ বিষয়ে স্কুল সভাপতি সোহরাব হোসেন বলেন, ‘টাকা-পয়সার কোনও লেনদেন হয়নি। সরকারি নিয়মনীতি অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’

তিন লাখ টাকার চেক প্রদান ও ডিজঅনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওই টাকা অন্য বিষয়ের। এরসঙ্গে নিয়োগের কোনও সম্পর্ক নেই।’

প্রধানশিক্ষক টাকা লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি এসব কিছুই জানি না। অন্য কারোর সঙ্গে তার লেনদেন হলেও হতে পারে।’