এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের বাড়িটি সংস্কার করে তার স্মৃতিকে ঘিরে যেন কিছু একটা করা হয়। সেই দাবির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মৃতি কমপ্লেক্স স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কমপ্লেক্সের নকশার কাজ শেষ হয়েছে। প্রায় শত কোটি টাকার এ প্রকল্পটি প্রস্তাব আকারে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে পাঠানোর অপেক্ষায় রয়েছে।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রস্তাবিত বহুতল বিশিষ্ট কমপ্লেক্সটিতে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের ব্যবহার করা আসবাবপত্র থাকবে, যা লোকজন দেখে মহান এই নেতার জীবনযাপন সম্পর্কে ধারণা পাবে। কমপ্লেক্সে একটি উন্নত পাঠাগার, গবেষণাগার ও মিলনায়তন থাকবে। দূর-দুরান্তের লোকজনের যেন কোনও অসুবিধা না হয়, তাই আবাসন ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এরপর ভিডিও ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আধুনিক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত কমপ্লেক্সে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ কমপ্লেক্সে গিয়ে মানুষ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে জানতে পারবে। এটি সবচেয়ে বেশি কাজে লাগবে নতুন প্রজন্মের। যদিও পুরো উদ্যোগটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি কাজ শুরু করছেন।’
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের ভাতিজা ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘দেশবাসী জাতীয় চার নেতার হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় বাস্তবায়ন দেখতে চায়। কারণ আমার চাচাকে হত্যার পর আমাদের পরিবারকে চরম অত্যাচার নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। যা ভাষায় প্রকাশ করার মতন নয়। আমার চাচা দেশের জন্য লড়ে গেছেন, মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছেন। আমরা কিশোরগঞ্জবাসী এ হত্যার রায় দেখতে উন্মুখ আছি।’
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নের বীরদামপাড়া গ্রামে জন্ম দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম। তার শৈশব কেটেছে এ গ্রামেই। যশোদল মিডল ইংলিশ স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে ভর্তি হন ময়মনসিংহ জিলা স্কুলে।
জাতীয় নেতা হলেও এলাকার প্রতি গভীর টান ছিল তার। স্বাধীনতার পর সৈয়দ নজরুল ইসলাম শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর যশোদলে গড়ে তুলেন সুগার মিল, টেক্সটাইল মিলসসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানা। যদিও পরবর্তী সময়ে সবগুলো শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যায়।