ভিসি অপসারণের দাবিতে ফের জাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

01দুর্নীতির অভিযোগ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৬ নভেম্বর) সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের পাশে মুরাদ চত্বরে জড়ো হতে থাকেন তারা।

আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবন থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের করে দেন আন্দোলনরত-শিক্ষার্থীরা। পরে ভবনটির ফটক আটকে দেওয়া হয়।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুরাদ চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মিছিলটি ছাত্রীহল এলাকায় অবস্থান করছে। ছাত্রীহলগুলো থেকে ছাত্রীদের বের হতে আহ্বান জানাচ্ছেন তারা। এসময় হল ছাড়ার নির্দেশের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন তারা।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বিক্ষোভ মিছিল শেষে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাচার্য অপসারণ মঞ্চে সংহতি সমাবেশ হবে। সেখানে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এদিকে, হল ছাড়ার নির্দেশের পরও রাতে হলে অবস্থান করা ছাত্রীদের অনেকেই আজ সকালে হল ছাড়েন।
একাধিক ছাত্রী জানিয়েছেন, হল ছাড়তে হল প্রশাসন তাদের চাপ প্রয়োগ করছে।

প্রসঙ্গত, দুর্নীতির অভিযোগে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন চলছে।  মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় আট জন শিক্ষকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এসে আন্দোলনরতদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। হামলা চলাকালে উপাচার্যের বাসভবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশকে নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। 

‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘প্রথমে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের একটি দল আন্দোলনরতদের ওপর হামলার চেষ্টা চালায়। এতে তারা ব্যর্থ হয়ে ছাত্রলীগ পাঠায়। ছাত্রলীগ এসে ন্যক্কারজনকভাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হামলা করে। এতে অনেকেই আহত হয়। আমরা এই হামলার নিন্দা জানাই। বলপ্রয়োগ করে কোনও প্রশাসন টিকে থাকতে পারে না। হামলাবাজ উপাচার্যকে দ্রুত সরিয়ে নিতে সরকারের কাছে দাবি জানাই।

এই ঘটনার পর দুপুরে এক জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা এবং বিকাল সাড়ে ৪টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশের কথা জানান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিকাল সাড়ে ৫টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

দুর্নীতির অভিযোগে ভিসির অপসারণ এবং আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। তিনটি ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা হলের তালা ভেঙে ওই মিছিলে যোগ দেন। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকালে তিন জন সিনেট সদস্য আন্দোলনে সংহতি জানান। বিক্ষোভে হল ছাড়ার নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সাড়ে ১২টার দিকে এ দিনের মতো বিক্ষোভ সমাপ্ত ঘোষণা করেন বিক্ষোভকারীরা। এরপর তারা হলে ফেরেন।

আরও পড়ুন: 

হলে ফিরেছেন বিক্ষোভকারীরা, সকালে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা