ব্যক্তি উদ্যোগে ৫০০ পরিবারকে দেওয়া হলো খাদ্য সহায়তা

বিনামূ্ল্যে অসহায়দের দেওয়া হচ্ছে পণ্যঅন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনোরকমে তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে সংসার চালান বিধবা সুফিয়া বেগম (৩৮)। কিন্তু করোনার কারণে বেকার হয়ে পড়েন তিনি। সন্তানদের নিয়ে খেয়ে-না খেয়ে দিন কাটছে তার। অসহায় এই নারীকে শনিবার (২৩ মে) আমন্ত্রণ জানানো হয় ‘ঈদ আনন্দ বাজারে’। সেখান থেকে তাকে বিনামূল্যে দুই ধরনের চাল, তেল, দুধ, সেমাই, লবণ, চিনি ও নতুন শাড়িসহ ১২ ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দেওয়া হয়। এক সপ্তাহের খাবার পেয়ে অনেকদিন পর তার মুখে হাসি ফোটে।

করোনার মধ্যে সুফিয়া বেগমের মতো যারা অনেক কষ্টে  দিন পার করছেন, এমন ৫০০ পরিবারের জন্য কিশোরগঞ্জ সম্মিলিত নাগরিক ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী এনায়েত করিম অমি শনিবার দুপুরে ব্যক্তি উদ্যোগে আয়োজন করেন পরিবেশবান্ধব ও মানবিক ‘ঈদ আনন্দ বাজার’এর। শহরের নগুয়ার বিন্নগাঁও মহল্লায় নিজ বাসার সামনে ব্যতিক্রমধর্মী এ বাজারের আয়োজন করেন তিনি।

বিনামূ্ল্যে অসহায়দের দেওয়া হচ্ছে পণ্যকোনও ধরনের আনুষ্ঠানিকতা না করে অভাবি লোকজনের জন্য খুলে দেওয়া হয় এ বাজার। সবাই সুশৃঙ্খলভাবে পণ্য নিয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফেরেন। বাজারে যাওয়া লোকজন জানান, সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এখানে লোকজনকে ঈদের উপহার দেওয়া হয়েছে। এটি এককথায় অসাধারণ উদ্যোগ।

প্রথমে প্রতেককে জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটিয়ে ঢোকানো হয় বাজারে। পরে তাদের সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করিয়ে পরতে দেওয়া হয় হ্যান্ডগ্লাভস। এরপর স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের নিয়ে যান পণ্যের সামনে। বিভিন্ন টেবিলে থরে থরে সাজানো পণ্য তারা নিজ হাতে ব্যাগে ভরে বাজার ত্যাগ করেন।

বিনামূ্ল্যে অসহায়দের দেওয়া হচ্ছে পণ্য‘ঈদ আনন্দ বাজার’ এর আয়োজক এনায়েত করিম অমি বলেন, 'মূল উদ্দেশ্য লোকজনকে শৃঙ্খলা শেখানো। সামনের দিনগুলোতে আমাদের আরও সতর্ক থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। প্রতিটি আয়োজনে করোনা ঝুঁকির বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমার আয়োজনে এ বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।' তিনি বলেন, 'করোনার অজুহাতে সবকিছু বন্ধ করে বসে থাকলে আমাদের চলবে না। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে সবাই সচেতন থাকলে সবকিছু খোলা রেখেও করোনা দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব।'

তিনি জানান, বাজারে উপস্থিত প্রত্যেককে—এক কেজি পোলাও চাল, পাঁচ কেজি সাধারণ চাল, এক প্যাকেট সেমাই, এক কেজি চিনি, আধা লিটার তেল, এক প্যাকেট লবণ, একটি সাবান, একটি হ্যান্ড সিনিটাইজার, একটি মাস্ক, শ্যাম্পু ও নারীদের জন্য একটি করে নতুন শাড়ি, আর পুরুষদের জন্য একটি করে লুঙ্গি উপহার দেওয়া হয়। প্রথম দফায় ৫০০ পরিবারের জন্য এ আয়োজন করা হয়েছে। ঈদের পর এই সংখ্যা আরও বাড়বে।