অ্যাম্বুলেন্সে পড়ে রইলো লাশ, ফোন পেয়ে দাফন করলো পুলিশ

অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যের দাফন করে পুলিশ
করোনা সংক্রমণের ভয়ে পাড়া-প্রতিবেশী ও স্বজনরা দাফনে কেউ এগিয়ে আসেনি। অ্যাম্বুলেন্স থেকে লাশ নামাতেও না। উপায় না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশকে (জিএমপি) ফোন করা হয়। পরে তারা এসে নিজ দায়িত্বে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আজিজুল ইসলামের (৬৭) লাশ দাফন করে। সোমবার (২২ জুন) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পশ্চিম বাউপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আজিজুলের স্ত্রী রহিমা বেগম ও নাতনি রাজিয়া সুলতানা মুক্তা জানান, প্রায় ১৬ বছর আগে পশ্চিম বাউপাড়া এলাকায় বাড়ি বানিয়ে সেখানে তারা বসবাস করতেন। আজিজুলের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের হারানিয়া আফগান বাড়ি এলাকায়। তার দুই ছেলের একজন কুয়েত ও অন্যজন লেবাননে চাকরি করেন। প্রায় দেড় বছর ধরে আজিজুল কিডনি ও হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। তার দু’টি কিডনিই ড্যামেজ হয়ে গেছে। রবিবার (২১ জুন) কিডনি ডায়ালাইসিস করাতে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় (ডায়ালসিস করার আগে) দুপুরে তিনি মারা যান। পরে তার নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ আসে। সিএমএইচ কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ রাত সাড়ে ১২টার দিকে গাজীপুরের বাসায় আনা হয়। দুই সন্তান বিদেশে থাকায় লাশ দাফনের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে এলাকাবাসীর সহযোগিতা চাওয়া হয়। করোনার ভয়ে লাশ দাফনের জন্য এলাকার কোনও লোকজন এগিয়ে আসেনি। এমনকি অ্যাম্বুলেন্স থেকে লাশ নামাতেও অস্বীকৃতি জানান তারা। উপায়ন্তর না পেয়ে পরিবার ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি জানান।
জিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স সহকারী কমিশনার আহসান হাবিব জানান, করোনার ভয়ে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যের লাশ দাফনে কেউ এগিয়ে আসছে না, এ খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ ওই লাশ দাফনের দায়িত্ব নেয়। থানা পুলিশের ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় ধর্মীয় অনুশাসন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোর রাতে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। এসময় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের একটি টিম সহযোগিতা করেছে।