বেতন-বোনাসের দাবিতে গার্মেন্ট শ্রমিকদের বিক্ষোভ, পুলিশের টিয়ারসেল

Gazipur-(2)- 29 July 2020-Garments Worker Unrest At Salna Oxford-1গাজীপুরে ঈদ বোনাস ও বেতনের দাবিতে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে। বুধবার (২৯ জুলাই) সকালে শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করে। পরে উত্তেজিত শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এই সময় পুলিশের দুই সদস্যসহ অন্তত সাত জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর ইসলাম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ সালনা এলাকার অক্সফোর্ড সার্ট লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে। শ্রমিকদের চলতি জুলাই মাসের ১৫দিনের বেতন পরিশোধের পূর্ব নির্ধারিত তারিখ ছিল বুধবার। পরেরদিন বৃহস্পতিবার বোনাস পরিশোধের কথা ছিল। বুধবার সকালে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের উদ্যোগ নেয়। এসময় শ্রমিকরা ঈদুল আজহার শতভাগ এবং গত ঈদুল ফিতরের বকেয়া ৫০ ভাগসহ মোট ১৫০ ভাগ ঈদ বোনাস ও চলতি জুলাইয়ের পুরো মাসের বেতন পরিশোধের দাবি জানায়। কর্তৃপক্ষের আশ্বাস না পেয়ে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে। উত্তেজিত কয়েক জন শ্রমিক কারখানার দরজা জানালার কাঁচসহ বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে সকাল ৯টার দিকে শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেয়। এতে মহাসড়কের উভয়দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর ইস্কান্দর হাবিব জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেয়। পুলিশ অবরোধকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে শ্রমিকরা পুলিশের দিকে ইট পাথর ছুঁড়তে থাকে। এতে পুলিশের দুই সদস্যসহ অন্তত সাত জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে শ্রমিকদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ১০ রাউন্ড টিয়ারসেল ও দুটি সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। প্রায় আধাঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

তিনি আরও জানান, ঘটনার পরে শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শেষে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের জুলাই মাসের ২০ দিনের বেতন ও ঈদুল আজহার শতভাগ এবং গত ঈদুল ফিতরের বকেয়া ৫০ ভাগ বোনাস পরিশোধের ঘোষণা দেয়।

কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল ফারুক জানান, সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী গত ঈদুল ফিতরের ৫০ ভাগ বোনাস পরিশোধ করা হয়। কিন্তু শ্রমিকরা গত সেই ঈদের অবশিষ্ট ৫০ ভাগ ও আসন্ন ঈদুল আযহার শতভাগ ঈদ বোনাসসহ চলতি জুলাইয়ের পুরো বেতন পরিশোধের দাবি জানায়। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ আসন্ন ঈদুল আজহার শতভাগ বোনাস ও জুলাই মাসের ২০দিনের টাকা পরিশোধের আশ্বাস দেয়। এছাড়া ঈদুল ফিতরের বকেয়া ৫০ ভাগ বোনাস ঈদুল আজহার পর পরিশোধ করা হবে।