বাংলা ট্রিবিউনের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি বিজয়ের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা

বাংলা ট্রিবিউনের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি এ কে বিজয়ের ওপর হামলার ঘটনায় জেলার বাসাইল উপজেলার কাউলজানি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান চৌধুরী হবিকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনের নামে মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাসাইল থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার বাদী হয়েছেন সাংবাদিক এ কে বিজয় নিজেই।
সাংবাদিক এ কে বিজয় জানিয়েছেন, ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন এক হিন্দু ব্যক্তির ঘর ভেঙে দেওয়ার ছবি তুলতে গিয়ে তিনি সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। চেয়ারম্যান ডেকে নিয়ে গিয়ে তার ওপরে হামলা করান বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

বাংলা ট্রিবিউনের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি এ কে বিজয়ের ওপর হামলার ঘটনায় টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের মানববন্ধন
তিনি বলেন, ‘রবিবার সকালে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ভ্যাকসিন প্রদানের সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়ার সময় হঠাৎ কাউলজানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান চৌধুরী হবির ফোন পাই। মোবাইল কল দিয়ে তিনি তার ইউনিয়ন পরিষদে একটি ঘটনার তথ্য সংগ্রহের অনুরোধ জানান। তার অনুরোধে সেখানে গিয়ে দেখতে পাই ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন একটি জমিতে একটি হিন্দু পরিবার ঘর তোলার চেষ্টা করায় তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান তাদের ওই জমিটি বিরোধপূর্ণ এবং পরিষদের সম্পত্তি এমন কথা বলছিলেন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ায় তার ডাকে পরিষদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন এমন অনেক লোক সেখানে উপস্থিত ছিল এবং তারা হিন্দু পরিবারটিকে শাসাচ্ছিল।’

এ কে বিজয়
তিনি বলেন, ‘‘এসময় চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা হলে তিনি তার বক্তব্য বলতে থাকেন। তবে এরপরই চেয়ারম্যানের লোকেরা ঘরটি ভেঙে দিতে থাকলে তার কিছু ছবি তুলতে থাকি আমি। এতে চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হন এবং তিনি ও তার সাগরেদ শওকত ‘সাংবাদিকের ছবি তোলার সাধ মিটাইয়া দে’ বলে তার লোকদের হুকুম করেন। সঙ্গে সঙ্গে তার লোকেরা আমাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষিসহ বাঁশের লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। তাদের মারধরে আমি পড়ে গেলে তখনও বেধড়ক মারধর করতে থাকে তারা। এরপর চেয়ারম্যান কপট অভিনয় করে তাদের সরিয়ে দেয় এবং আমাকে তার ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে হেফাজতে নিয়ে যায়। তার লোকদের দিয়ে মারধর করিয়ে উল্টো তাদের দিয়েই ইউনিয়ন পরিষদ অবরুদ্ধ করে রাখে।’’
বিজয় বলেন, ‘মোটারসাইকেলে যাওয়ায় এবং শহরে আসার তাড়া থাকায় আমার মাথায় তখন হেলমেট ছিল, এ কারণে আমি প্রাণে রক্ষা পাই। তবে তাদের মার ফেরাতে গিয়ে আমার হাতের হাড় ভেঙে যায়। পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় আমি সেখান থেকে বের হয়ে প্রথমে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই। সেখান থেকে আমাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে এখানেই চিকিৎসাধীন আছি।’’

বাংলা ট্রিবিউনের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি এ কে বিজয়ের ওপর হামলার ঘটনায় টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের মানববন্ধন
আহত সাংবাদিক বিজয় বলেন, ‘বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে ঘর তোলার ঘটনা নিয়ে ওই দুই পক্ষে কোনও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। কেবল আমার ওপরে আক্রমণ হয়েছে। এটা চেয়ারম্যান ও তার লোকদের ইচ্ছাকৃত ঘটনা। তাদের লোকের কুকীর্তি প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়ে তারা আমার ওপরে এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি এ কারণে মামলা করেছি এবং এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
মামলার এজাহারে চেয়ারম্যান ও শওকত ছাড়াও নাম উল্লেখ করা অন্য আসামিরা হচ্ছে আলতাব, মালেক, জুবায়ের, ইয়ামিন, শিহাব, শামীম, রফিক, নাসু, মতিন ও তানভীর।

আরও পড়ুন:

বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক একে বিজয়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক এ কে বিজয়ের ওপর হামলা