বাজারে চড়া দাম, এরমধ্যেই বাম্পার ফলন। ফলে ভরা মৌসুমেও লাভবান ফরিদপুরের সালথার পেঁয়াজ চাষিরা। এ উপজেলার এখন প্রধান ফসল পেঁয়াজ। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিপুল উৎসাহে চলছে পেঁয়াজ উত্তোলন। আবহাওয়া ভালো থাকায় গত বছরের মতো এবার পেঁয়াজের চাষে কোনও প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়নি চাষিদের। আর তাতে পেঁয়াজের ফলন এবার আরও ভালো হয়েছে।
একাধিক পেঁয়াজ চাষি জানান, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। পেঁয়াজ তোলা শুরু হয়েছে এ মাসের শুরুর দিক থেকে। এখন মোটামুটি অর্ধেক মাঠের পেঁয়াজ তোলা শেষ। এই পেঁয়াজকে হালি পেঁয়াজ বলেন তারা।
এক চাষি জানান, গত বছর প্রতি বিঘা জমিতে ৬০ থেকে ৭০ মণ করে পেঁয়াজ পেয়েছেন চাষিরা। এবার ফলন আরও বেড়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে এবার ১শ’ মণে বেশি পেঁয়াজ পাওয়ার আশা করছেন তারা। বেশিরভাগ কৃষকের ফলন এমন হয়েছে এবার। দেশে পেঁয়াজের দামের ঊর্ধ্বগতি থাকায় দামও মিলছে ভালো। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে প্রতিমণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫শ’ টাকা দর, যার প্রতি কেজিতে কৃষক দাম পাচ্ছেন ৩৫ থেকে সাড়ে ৩৭ টাকা! ভরা মৌসুমে এমন দাম পাওয়ায় কৃষকরাও বেজায় খুশি।
উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ইউসুফদিয়া গ্রামের পেয়াজ জুবায়ের মোল্যা বলেন, এবার ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছি। পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। গত বছর অতিবৃষ্টিতে অনেক পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এ বছর বৃষ্টি না হওয়ার কারণে পেঁয়াজ পচে নষ্ট হবে না বলে আশা করছি। তবে পেঁয়াজের মৌসুমে একবার বৃষ্টি হলে ফলন আরও ভালো হতো।
হিসেব কষে দেখা গেছে, এক বিঘা জমিতে কৃষকের বীজক্রয় আর উৎপাদন খরচ মিলে ২০-২২ হাজার টাকা খরচ পড়লেও এবার তার ফসল বিক্রি থেকে আয় হবে প্রায় দেড় লাখ টাকা। ফলে খরচের ৬ গুণেরও বেশি আয় হওয়ায় পেঁয়াজ চাষের দিকে আরও ঝুঁকছেন তারা।
মিরাকান্দা গ্রামের কাশেম মোল্যা বলেন, এ বছর আমি ৭ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছি। পেঁয়াজের দামও এখন ভালো। সব সময় পেঁয়াজের দামটা স্বাভাবিক থাকলে আমাদের জন্য ভালো হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জিবাংশু দাস বলেন, সালথায় চলতি মৌসুমে ১২ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষাবাদ হয়েছে। পেঁয়াজের ফলন আশানুরূপ হয়েছে। কৃষক যদি পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পায় সেক্ষেত্রে সালথায় বাণিজ্যিকভাবে পেঁয়াজের চাষাবাদ শুরু হয়ে যাবে।
ভিডিও দেখুন: