হেফাজতের সঙ্গে সংঘর্ষে সিরাজদিখান থানার ওসি গুরুতর আহত

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কয়েকটি স্থানে হেফাজতের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম জালাল উদ্দিন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাঁর মাথায় ৩১টি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে।

এছাড়াও সংঘর্ষের সময় আহত পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান ও পুলিশ কনস্টেবল শাহিন একই হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

রবিবার (২৮ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে উপজেলার বড় শিকারপুর ও শুলপুর এলাকায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটেছে। এতে হেফাজতেরও কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নিমতলা এলাকায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা অবস্থান করে প্রায় পৌনে একঘণ্টা অবরোধ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হেফাজত নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেন। এরপর নিকটস্থ বড়শিকারপুর ও শুলপুর এলাকায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ এবং ফাঁকা গুলি ছোড়ে। হেফাজতের নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ছোড়ে পুলিশের ওপর। সংঘর্ষ চলাকালীন বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর ও তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়।

হেফাজত ইসলামের সিরাজদিখান উপজেলা সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ কাশেমী জানান, হেফাজতের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) তৌফিক রফ জানান, ১০ জন চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। এদের সবাই পুরুষ। কেউই গুরুতর আহত নন।

ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের হাঁসাড়া হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, এক্সপ্রেসওয়ের নিমতলা এলাকায় সকাল সোয়া ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অবরোধ করেছিল হেফাজতের নেতাকর্মীরা। তবে হাইওয়ে পুলিশের কেউ আহত নেই।

সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোবাইলে জানান, ওসি জালাল উদ্দিনের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়েছে। পিকেটিংয়ের কারণে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। আমিসহ তিনজন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মোট কতজন আহত হয়েছেন তা জানা যায়নি।

জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন জানান, ওসিসহ ৪-৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তবে ওসি গুরুতর আহত। মধুপুর পীর আল্লামা আব্দুল হামিদের আহতের খবরটি নিয়ে গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানান এসপি।