লকডাউনে বাঙ্গি চাষিদের মাথায় হাত

ফলন বেশি, চাহিদা কম। লকডাউনের কারণে বাজারে লোক সমাগম সীমিত। চাষিদের কাছেও আসছেন না পাইকাররা। কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় হাসি নেই ফরিদপুরের লালমি বাঙ্গি চাষিদের মুখে। তাই জেলার বিভিন্ন স্থানের খেতেই নষ্ট হচ্ছে এই বাঙ্গি।

মহামারি করোনা আর লকডাউনের কারণে চলতি বছর লালমি বাঙ্গির চাষ করে বেশ লোকসানের মুখে পড়েছেন ফরিদপুরের চাষিরা। জেলার ৯ উপজেলার প্রায় স্থানে এর চাষাবাদ হলেও সবচেয়ে বেশি লালমি বাঙ্গির আবাদ হয় সদরপুরের কৃষ্টপুর ও ভাষানচর ইউনিয়ন এলাকায়। অন্যবারের চেয়ে এ বছর রোজাকে সামনে রেখে অধিক জমিতে চাষিরা বাঙ্গির আবাদ করেছিলেন। ফলন আশাতীত হলেও একেবারে দাম না থাকায় খেতেই নষ্ট হচ্ছে এসব লালমি বাঙ্গি।

স্থানীয় চাষিরা জানান, গতবারও করোনা ছিল কিন্তু বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসেছিলেন। তারা ট্রাকে করে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে লালমি বাঙ্গি রপ্তানি করতো। এবছর তাদের দেখা মিলছে না। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা আসতেন লালমি বাঙ্গি কিনতে, এবার তাদেরও খোঁজখবর নেই। ক্রেতাশূন্য চাষিরা এবার বেশ লোকসানের মধ্যে পড়বেন বলে হতাশার সুরে জানান তারা।

সদরপুর উপজেলার মটুকচরের চাষি রাজিব বেপারী জানান, এবছর এক বিঘা জমিতে লালমি বাঙ্গি চাষ করতে প্রায় অর্ধ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। লকডাউনের কারণে এবছর ঢাকা থেকে পাইকার না আশায় লালমি বাঙ্গি বিক্রি করতে পারছি না। কিস্তি তুলে ধার-দেনা করে লালমির আবাদ করলেও খরচ উঠা নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।

কৃষ্টপুর এলাকার চাষি হান্নান মোল্যা জানান, গত বছর প্রকারভেদে একেকটি লালমি বাঙ্গি ৫০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এবছর ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ দিয়ে তাদের খরচ উঠানোই মুশকিল হবে বলে জানান তিনি।

বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা এলাকার হারুন হোসেন জানান, এবার ফলন ভালো হলেও পাইকারি ব্যবসায়ীরা না আসায় চাষিদের অবস্থা ভালো না।

ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. হযরত আলী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এবছর জেলায় ২ শত ৭ হেক্টর কৃষি জমিতে বাঙ্গির চাষাবাদ হয়েছে। এবার ফলনও হয়েছে খুব ভালো। সাধারণত কৃষকদের ফসলের ভালো-মন্দের পরামর্শ আমরা দিয়ে থাকি কিন্তু ফসল বাজারজাতকরণে আমাদের কিছু করার নেই।