মায়ের মরদেহ দেখতে এসে স্বামী-সন্তানের মরদেহ নিয়ে ফিরলেন আদুরি

মায়ের মৃতদেহ দেখতে গিয়ে স্বামী আর সন্তানের মরদেহ নিয়ে ফিরতে হলো ফরিদপুরের আদুরি বেগমকে। সোমবার (৩ মে) সকালে মাদারীপুরের শিবচরে মর্মান্তিক স্পিডবোট দুর্ঘটনায় নিহত হন আদুরির স্বামী আরজু মিয়া ও দেড় বছরের শিশু ইয়ামিন। স্বামী আর সন্তানের মৃত্যু খুব কাছ থেকে দেখলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে ফিরেছেন আদুরি বেগম। গুরুতর আহত হয়েও স্বামী আর প্রিয় সন্তানের খোঁজে হাসপাতাল থেকে ছুটে এসেছেন দোতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তার কান্না আর আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ।

বিলাপ করে কান্নার ফাঁকে আদুরি জানান, মায়ের মৃত্যুর সংবাদে ঢাকা থেকে গ্ৰামের বাড়ি ফিরছিলেন তিনি ও তার পরিবার। নৌপথে যাত্রার শুরু থেকেই বেপরোয়া গতিতে স্পিডবোট চালাচ্ছিলেন চালক। বেপরোয়া গতির কারণেই নোঙর করা বালুবোঝাই বাল্কহেডের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আদুরি বেগম হাহাকার করছেন আর বলছেন, ‌'আমার সব শেষ হয়ে গেল। আল্লাহ আমার সবাইকে নিয়ে গেলো।'

শিবচরে বাল্কহেডের সঙ্গে স্পিডবোটের সংঘর্ষ, নিহত ২৬

আদুরির মতো স্বজনদের খোঁজে আসা মানুষের আহাজারি এখন মাদারীপুরের দোতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। মৃতদেহের সঙ্গে থাকা পরিচয়পত্রের সূত্র ধরে স্বজনদের ফোন করছে স্থানীয় প্রশাসন। ফোন পেয়ে স্বজনদের খোঁজে বিদ্যালয় মাঠে ভিড় করছেন অনেকে। লকডাউনে প্রশাসনের লোকদের সঙ্গে আঁতাত করে নৌপথে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে স্পিডবোট চলাচল করছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

এদিকে ঘটনা তদন্তে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। নিহত প্রতিটি পরিবারকে দাফন-কাপনের জন্য ২০ হাজার করে অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, সকালে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ-রুটে একটি বালুবাহী বাল্কহেডের সঙ্গে যাত্রীবাহী একটি স্পিডবোটের সংঘর্ষ হয়। এতে ২৬ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছে।