দুর্ভোগের শেষ নেই শিমুলিয়া ঘাটে

শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ। বহরে থাকা ১৬টি ফেরির মধ্যে ১৩টি চলছে। কিন্তু শিমুলিয়া ঘাটে পদ্মা পারের অপেক্ষায় থাকা হাজার হাজার যাত্রীর তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল। অন্যদিকে, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ ও বিজিবির চেকপোস্ট গলেও যাত্রীরা ছুটে চলেছেন গন্তব্যের পানে। বুধবার (১২ মে) সকাল থেকেই ঘাটে অপেক্ষায় দেখা যায় হাজার হাজার যাত্রীকে। তাদের সংখ্যা লক্ষাধিকও হতে পারে। পদ্মা পার হয়ে নিজ বাড়িতে ঈদ করতে মরিয়া এসব যাত্রীকে দিনভর প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঘাটে অব্যবস্থাপনার কারণে যাত্রীর ভিড়ে ফেরি আনলোড হতে দীর্ঘ সময় লাগায় ভোগান্তির মাত্রা প্রকট হয়েছে।  

রাজধানী ঢাকা বা আশেপাশের এলাকা থেকে ছুটে আসা এসব যাত্রীকে পথ পেরোতে হচ্ছে সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, মোটরসাইকেল, এমনকি কাভার্ডভ্যানে চড়ে। তাও একাধিকবার যান পাল্টে ও কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে তারা শিমুলিয়া ঘাটে আসছেন। কিন্তু, এখানে এসে যাত্রীরা পড়ছেন চূড়ান্ত ভোগান্তির মধ্যে। কার আগে কে ফেরিতে উঠবেন তা নিয়ে হুড়োহুড়িতে পড়েন যাত্রীরা। যাত্রীরা পন্টুনের কাছে গিয়ে ভিড় করায় ঘাটে যান আনলোড করতে অনেক সময় লাগছে। অন্যদিকে, ফেরির জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়। শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ মানুষের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। ফেরিগুলোতে যাত্রীরা চাপাচাপি করে পদ্মা পার হচ্ছেন। এতে গরমে ও হুড়োহুড়িতে দুটি ফেরিতে মোট পাঁচ জন মারা গেছেন। আহত সাত-আট জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

.এদিকে, তীব্র রোদে অতিষ্ঠ যাত্রীদের অনেকে ফেরির বিকল্প হিসেবে ট্রলারে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অর্ধশতাধিক ট্রলার শিমুলিয়া ফেরিঘাট থেকে বাংলাবাজার ও মাঝিকান্দির উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। এসব ট্রলার থামাতে কর্তৃপক্ষকে কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এ বিষয়ে মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল কবির বলেন, ‘এখন আর আমাদের কিছু করার নেই। ঘাটে যাত্রীদের অনেক চাপ।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহমেদ জানান, ‘ঘাটে গতরাত থেকেই যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপের কারণে বাংলাবাজার ঘাট থেকে আসা ফেরি শিমুলিয়া ঘাটে আনলোড করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। কখনও দু-তিন ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে পুরো ফেরি আনলোড করতে। ঘাটে ও মহাসড়কে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবির সদস্যরাও কাজ করছেন। তবু যাত্রীদের সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

গরমে ও হুড়োহুড়িতে দুটি ফেরিতে মোট পাঁচ জন মারা গেছেনএ বিষয়ে কথা বলার জন্য মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন, লৌহজং ইউএনও হুমায়ুন কবীর, শিমুলিয়া ঘাটের বিআইডব্লিউটিএ’র ব্যবস্থাপক শাহাদাত হোসেন, বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক (মেরিন) আহম্মেদ আলী, এজিএম শফিকুল ইসলাম ও মাওয়া ট্রাফিক ইনচার্জ হিলালকে ফোন করা হলেও তারা ধরেননি।

আরও খবর: ফেরিতে যাত্রীদের চাপে ৫ জনের মৃত্যু