বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তা লাঞ্ছিত, ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিষেধাজ্ঞা না মেনে স্পিডবোট চালালেন আ. লীগ নেতারা

মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করে আরিচা থেকে কাজিরহাট রুটে স্পিডবোটে যাত্রী পরিবহন ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে শিবালয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুসসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের ৭ জন নেতার নামে মামলা করেছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটি)-র বন্দর কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ বাদী হয়ে শিবালয় থানায় এই মামলাটি দায়ের করেছেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আহসান মিঠু, সাংগঠনিক সম্পাদক নকুল চন্দ্র শীল, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নূরে আলম সিদ্দিকী, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম, শিবালয় সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম এবং যুবলীগের কর্মী মো. জিন্নাহ।

মামলার এজাহার এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্পিডবোট ও লঞ্চ চলাচল বন্ধে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গতকাল বুধবার কতিপয় ব্যক্তি আরিচা-কাজীরহাট নৌপথে স্পিডবোট ও লঞ্চে যাত্রী পরিবহন করেন। খবর পেয়ে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ’র আরিচা কার্যালয়ের বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ তার সহকর্মীদের নিয়ে আরিচা ঘাটে গিয়ে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করে দেন। এরপর তিনি সেখানে অবস্থান করলে তার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস এবং স্পিডবোট চালানোর নির্দেশ দেন। এরপর আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল কুদ্দুসের নির্দেশে অন্য নেতা-কর্মীরা সরকারি কাজে বাধা দিতে থাকে এবং বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা ও কর্মচারীরে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং ধাক্কা মেরে লাঞ্ছিত করেন।

এ বিষয়ে মামলার বাদী মাসুদ পারভেজ বলেন, সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করে অবৈধ ভাবে স্পিডবোট ও লঞ্চে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছিল। পরে এসব নৌযান চলাচল বন্ধ করা হলে তিনিসহ তার সহকর্মীদের ওপর হামলা ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করা হয়। এ ঘটনায় তিনি সাতজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস বলেন, বুধবার সকালে বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ অনুমতি দিলে তারা পাঁচ-ছয়টি স্পিডবোট দিয়ে যাত্রী পারাপার করতে থাকেন। পরে দুপরের দিকে ওই কর্মকর্তা তার লোকজন নিয়ে ঘাটে এসে নিষেধ করলে তাদের সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলেন। এছাড়া আর ঘটনা ঘটেনি।

শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবির মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সরকারি কর্তব্য কাজে বাধা এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগে বিআইডব্লিউটিএ’র একজন কর্মকর্তা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।