৬ মাস আগে তালাক দেওয়া স্বামী-স্ত্রীর পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন

টাঙ্গাইলের সখিপুরে তালাক দেওয়া স্ত্রীর ‘হয়রানি’ থেকে মুক্তি পেতে মানববন্ধন করেছেন স্বামী আব্দুল লতিফ মিয়া। মঙ্গলবার (২২ জুন) দুপুরে সখিপুর-ঢাকা সড়কের ঘেচুয়া ছাপড়াবাজার এলাকায় এ মানববন্ধন করেন তিনি।

আব্দুল লতিফ উপজেলার ঘেচুয়া গ্রামের মৃত শামছুল হকের ছেলে। তার প্রাক্তন স্ত্রী আয়েশা বেগম সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মৃত কুরবান আলী শেখের মেয়ে।

আব্দুল লতিফ অভিযোগ করে বলেন, ‘আয়েশা বেগমের সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন সংসার করি। সে একজন চরিত্রহীন নারী। সংসারে থাকাকালীন সে আমাকে ও আমার মাকে শারীরিক-মানসিকভাবে নির্যাতন করে। আমি একজন নির্যাতিত পুরুষ। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আমি গত ছয় মাস আগে তাকে তালাক দেই। তালাকপ্রাপ্ত হয়েও সে আমার বাড়ি দখল করে আছে।’

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘ব্যবসায়িক কাজে আমি বাইরে থাকায় সে বিভিন্ন জায়গায় রাত্রীযাপন ও বেপরোয়া চলাফেরা করত। এগুলো বলতে গেলে সে আমাকে হুমকি-ধমকি দিতো। সে এখন আমার বাড়ি দখল করে আছে। আমি ওই নারীর হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা চাই।’

মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য সাহাবউদ্দিন আহমেদ, লতিফের মা খামিরন নেছা, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ইয়াছিন আলী, মিনহাজ উদ্দিন প্রমুখ।

এদিকে আব্দুল লতিফের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ জুন (বৃহস্পতিবার) সখিপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহীন মিয়া দুই ছেলেসহ ওই নারীকে কোনও নারী পুলিশের সহযোগিতা ছাড়াই ঘর থেকে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে বাড়িতে তালা দেন। পরে স্থানীয়রা ওই নারীকে আবার ঘরে তুলে দেন। এ ঘটনায় এসআইয়ের প্রত্যাহার দাবি করে গত রবিবার (২০ জুন) দুপুরে একইস্থানে ওই নারী মানববন্ধন করেছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, আব্দুল লতিফ মিয়ার সঙ্গে ২০০১ সালে আয়েশা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের বড় ছেলে মুশফিকুর রহমান (১৭) ঢাকার একটি কলেজে পড়াশোনা করেন ও আরেক ছেলে মশিউর রহমানের বয়স পাঁচ বছর। গত পাঁচ বছর ধরে আব্দুল লতিফ গাজীপুরে একটি কারখানায় চাকরি করেন। এ সময়ে তাদের পারিবারিক কলহ চলছিলো। স্বামীর বাড়িতে টিউশনি করে জীবনযাপন করে আসছেন ওই নারী। প্রায় ছয় মাস আগে তাদের বিচ্ছেদ হয়। সপ্তাহখানেক আগে আব্দুল লতিফ মিয়া সখিপুর থানায় স্ত্রীকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

আয়েশা বেগম বলেন, ‘পাঁচ বছর ধরে আমার স্বামী আমার দুই ছেলেসহ কারও ভরণপোষণ করেন না। শুনেছি, তিনি গাজীপুরে আরেকটা বিয়ে করেছেন। টিউশনি করে আমি ঘর তৈরি করেছি। এটা আমার বাড়ি। আমি এখান থেকে সরবো না। দুই ছেলেকে নিয়েই থাকবো।’

এসআই শাহীন মিয়ার দাবি, তিনি ঘটনার তদন্ত করতে ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাকে সব ধরনের আইনি সহায়তার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। তিনি ওই নারীকে ঘর ছাড়া করার কথা অস্বীকার করেন।