সৌদি থেকে ফিরে গরুর খামারে সফল শরীফুল

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় গরু দাবি করে নাম রাখা হয়েছে ‘কিশোর বাদশা’। সবার দৃষ্টি কাড়া ‘কিশোর বাদশার’ দাম ১৩ লাখ টাকা চান মালিক। উপজেলার পানান গ্রামের সৌদিফেরত শরীফুল ইসলামের খামারের গরুটি এবারের কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে গরুর খামার দিয়ে সফল হয়েছেন শরীফুল।

এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকেই যোগাযোগ করছেন গরুটি কেনার জন্য। দরদাম হলেও আশানুরূপ দাম এখনও ওঠেনি। ‘কিশোর বাদশার’ মালিক জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন দাম করেছেন। সাত লাখ টাকা পর্যন্ত উঠেছে দাম।

‘কিশোর বাদশার’ দৈর্ঘ্য ৯ ফুট, উচ্চতা পাঁচ ফুট। ওজন প্রায় ১১০০ কেজি। হালকা লাল বাদামি রঙের ব্রাহমা জাতের গরুটি দেশি পদ্ধতিতে খামারে মোটাতাজা করা হয়েছে। খাওয়ানো হয়েছে কাঁচা ভুট্টা গাছ, খড়, ভুষি, ভুট্টা ভাঙা ও প্রাকৃতিক ঘাস। 

শরীফুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন দেখে আমার আগ্রহ জাগে গরু মোটাতাজা করার। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সহযোগিতায় গরুটি মোটাতাজা করেছি। বিশাল আকৃতির গরুটি ১৩ লাখ টাকা বিক্রি করতে চাই। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে কিছুটা কম হলেও বিক্রি করে দেবো। দেশের যেকোনও জায়গা থেকে যে কেউ কিনতে চাইলে পৌঁছে দেবো নিজ দায়িত্বে। তবে করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন থাকায় গরুটি বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় আছি। 

হোসেনপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় গরু দাবি করে নাম রাখা হয়েছে ‘কিশোর বাদশা’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শরীফুল ইসলাম ১৪ বছর সৌদি আরবে থেকে ২০১৭ সালে দেশে ফেরেন।গত তিন বছরে বাড়ির আঙিনায় গরুর খামার গড়েন। বর্তমানে খামারে আরও আটটি গরু রয়েছে। একেকটার দাম ৮০ থেকে এক লাখ টাকার মতো। উপজেলার অনেকেই তার খামার দেখতে আসেন। পাশাপাশি পরামর্শও নেন। কেউ নতুন খামার করতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে শরীফুলের খামার দেখতে পাঠানো হয়। তার খামারে সবমিলে প্রায় ২০ লাখ টাকার গরু আছে।

গোবিন্দপুর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান হিমেল খান বলেন, শরীফ খুব পরিশ্রমী ও কর্মঠ খামারি। সৌদি আরব থেকে ফিরে গরুর খামারটি গড়ে তুলেছেন। ‘কিশোর বাদশার’ পাশাপাশি তার খামারে দেশি পদ্ধতিতে লালনপালন করা আরও কয়েকটি গরু রয়েছে। আশা করছি, ‘কিশোর বাদশাকে’ ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন শরীফুল।

হোসেনপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল মান্নান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, শরীফুল ইসলামের গরুটি সবদিক বিবেচনায় উপজেলার মধ্যে সেরা। আশা করছি, ন্যায্যমূল্যে বিক্রি হবে। ভালো দাম পেলে গরু পালনে আগ্রহ বাড়বে অন্য খামারিদের।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, এবার কোরবানির ঈদে কিশোরগঞ্জ জেলায় বিক্রির জন্য ৮২ হাজার গরু-ছাগল প্রস্তুত রয়েছে। চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি গরু-ছাগল রয়েছে। তবে লকডাউনের কারণে পশু বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় আছেন অনেক খামারি।