করোনা ঠেকানো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার কাজ নয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করেনা সংক্রমণ ঠেকানো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার কাজ নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া। সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য অন্যসব মন্ত্রণালয় কাজ করছে। দেড় বছর ধরে আমরা অদৃশ্য শক্তির সঙ্গে যুদ্ধ করছি। এখন আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে ও সরকার ঘোষিত লকডাউন মানতে হবে। গ্রামের হাটবাজার, চায়ের দোকানে মানুষের আড্ডা বন্ধ করতে হবে।

সোমবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় চলমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মানিকগঞ্জের সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও গণ্যমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় (ভার্চুয়াল) তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, গ্রামের মানুষের ধারণা ছিলো, তাদের করোনা হবে না। কিন্তু এখন গ্রামের মানুষের করোনা সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। সারাদেশে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে মনিটরিং কমিটিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়িতে লাল পতাকা ওড়ানোর পাশাপাশি সচেতনতার জন্য নিয়মিত মাইকিং করতে হবে। সচেতনতার অভাবে আমরা করোনা আক্রান্ত হচ্ছি। এছাড়া জ্বর-কাশি নিয়ে অবহেলা করা যাবে না। করোনা পরীক্ষা বাড়াতে হবে। করোনা পরীক্ষা নিয়ে অনেকের মধ্যে অনাগ্রহ রয়েছে।

জাহিদ মালেক বলেন, সারাদেশে স্বাস্থ্য বিভাগে ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ান মিলিয়ে ৫০ হাজার লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আরও ডাক্তার-নার্স নিয়োগ দেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। করোনার কারণে নন-কোভিড রোগীদের সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। আমরা সচেতন না হলে হাসপাতালের বেড বাড়িয়েও পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব হবে না। সারাদেশে করোনা রোগীর জন্য ১৬ হাজার বেড রয়েছে। ইতোমধ্যে ৯০ ভাগ বেডে রোগী আছে। 

তিনি বলেন, ভ্যাকসিন আনার জন্য আমরা সব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। চলতি মাসে এক কোটি ও আগামী মাসে আরও এক কোটি ভ্যাকসিন আসবে। ভ্যাকসিন দেওয়ার পাশাপাশি আমাদের মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। অন্যথায় গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হবে হাসপাতালেও জায়গা পাওয়া যাবে না।

মন্ত্রী মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালকে এখন থেকে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করেন। এছাড়া সারাদেশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা জোরদারে আহ্বান করেন।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন- মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, পুলিশ সুপার (এসপি) রিফাত রহমান শামীম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, পৌর মেয়র রমজান আলী, সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমীন আখন্দ, সাটুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ, সিংগাইর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান, কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক গৌতম রায়, মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু, মানিকগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল প্রমুখ।