জুস কারখানায় আগুন: সরকারের অবহেলাকে দায়ী করলেন বিএনপি নেতা

‘সরকার ও সরকারি সংস্থাগুলোর দায়িত্ব অবহেলার কারণেই’ সেজান জুস কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫২ শ্রমিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি নিহত ও আহতদের পরিবারগুলোকে আইএলও কনভেনশনের ১২১ ধারা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান।

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্নগোপ এলাকায় আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাটি পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সমাজ কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, ঢাকা বিভাগ বিএনপি সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান হুমায়ন ও তারাবো পৌর বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দিন।

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সাভারের রানা প্লাজায় অগ্নিকাণ্ডে যেমনভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে, এখানেও সেভাবে দিতে হবে। শুধুমাত্র সরকারকে এই বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। সজিব গ্রুপের উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রফতানি করে। তাদের বায়ার (ক্রেতা) আছে। যে শ্রমিকের উৎপাদিত পণ্য তারা নেয়, সেসব বায়ারদের দায়িত্ব রয়েছে আগুনে পোড়া নিহত ও আহত শ্রমিকদের প্রতি। এখন শুধু প্রয়োজন সরকারি উদ্যোগ।’

তিনি বলেন, ‘মালিকপক্ষ মুনাফার জন্য অনিয়ম করেছে। কিন্তু যারা এগুলো দেখভাল করার দায়িত্বে রয়েছে তারা কী করেছে? তারা যদি নিয়মিত পরিদর্শন করতো, কারখানায় যে ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে তা দেখতো, মালিককে যদি এগুলো সংস্কারে বাধ্য করতো। তবে এই অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতো না। এই সরকার তো জনগণের ভোটে নির্বাচিত না। তাই মানুষের কাছে তাদের কোনও দায়বদ্ধতা নেই। তারা কোনও কিছু পরোয়া করে না। দেশে একের পর এক অগ্নিকাণ্ড হলেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তাজরিন ফ্যাশন, রানা প্লাজা ধস, এফআর টাওয়ারসহ বড় বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও সরকার এসব নিয়ন্ত্রণে বা আগুন যাতে না লাগে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।’ এছাড়া কারখানাটিতে নিয়মবহির্ভূতভাবে শিশুশ্রম ও নানা অনিয়মের সমালোচনাও করেন বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা।

মালিকপক্ষ, সরকার, সরকারি সংস্থাগুলোর গাফিলতি ও দুর্নীতির কারণে আগুনের ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে বিএনপির পক্ষ থেকে নিন্দা জানান তিনি। এছাড়া আগুনে পুড়ে নিহত ও আহত শ্রমিকদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের নেতাদের সঙ্গে ছবি তোলা এবং পাশে দাঁড়ানো নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া গ্রুপের নেতাদের সঙ্গে পৌর বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দিন গ্রুপের নেতাকর্মীদের হাতাহাতি হয়েছে। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নিলে এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৫ নেতাকর্মী আহত হন। 

অপরদিকে, দুপুরের পর অগ্নিদুর্ঘটনা কবলিত কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা শুরু করে কর্তৃপক্ষ। বেতন নিতে সকাল থেকেই শ্রমিকরা কারখানায় আসতে শুরু করেন। তাদের অধিকাংশই কিশোর-কিশোরী।